ডেস্ক নিউজ –
১৯ আগস্ট,২০২৩,শনিবার বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস এই দিনে প্রতি বছর বিশ্বের সকল দেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়।
১৮৩০ সালে লুই ডাগে সর্বপ্রথম ফটোগ্রাফিক প্রসেস আবিষ্কার করেন, যার নাম ‘ডাগেরোটাইপ’। দ্য ফ্রেঞ্চ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস ১৮৩৯ সালের ৯ জানুয়ারি সেই প্রসেসটি ঘোষণা করেন। এরপর ফরাসি সরকার ওই বছরেরই ১৯ আগস্ট দিন থেকে বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। সেই থেকে প্রত্যেক বছর এই দিনটি বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস হিসেবে উদযাপন করে আসছে সারা বিশ্ব।
ফটোগ্রাফির উদ্ভাবক হিসাবে ফ্রান্সের বিজ্ঞানী জোসেফ নিপস এবং চিত্রশিল্পী লুই জ্যাক মান্ডে দাগুয়েরকে বিবেচনা করা হয়।
১৮৩৭ সালে নাইসফোর নিপেক ও লুইস ডাগুয়েরে ডাগুয়েরিওটাইপ ফটোগ্রাফিক সিস্টেম আবিষ্কার করেন। এই উপায়ের নাম হল ডাগুয়েরিওটাইপ। বিজ্ঞানী লুইস ডাগুয়ের সর্বপ্রথম ছবি তোলার ব্যবহারিক এ উপায় আবিষ্কার করেন। তার নাম অনুসারেই ছবি তোলার এই উপায়ের নাম দেওয়া হয় ডাগুয়েরিওটাইপ টাইপ ফটোগ্রাফি। তখন থেকেই ফটোগ্রাফিতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়।
ফটোগ্রাফি শুধু ছবি হলেও এতে ভাষার বাধা অতিক্রম করে মিশে থাকে আবেগ-গল্প-দৃষ্টিভঙ্গি। শ্বাসরুদ্ধকর জলপ্রপাত থেকে শুরু করে অত্যাশ্চর্য প্রাকৃতিক বিস্ময় ও পৃথিবীর সুন্দর জায়গাগুলোর দেখা মেলে ফটোগ্রাফিতে। শুধু তাই নয় একটি ফ্রেমেই কখনো তা হয়ে যায় ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিল। আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে লুকিয়ে আছে একজন ফটোগ্রাফার।
এই দিবসটি ফটোগ্রাফিকে শিল্পের একটি বৈধ রূপ হিসেবে তুলে ধরে ফটোগ্রাফারদের বিভিন্ন কৌশল, রচনা এবং শৈলী নিয়ে পরীক্ষা করতে উৎসাহিত করে। ফটোগ্রাফি হলো মুখে না বলা গল্প, যা সুন্দরভাবে সময়, আবেগ, সংস্কৃতি, ইতিহাস সহ অনেক মুহূর্তের সত্যতাকে আয়ত্ত করে।
যেহেতু চোখে দেখা যায়, সেহেতু আমাদের চারপাশে পৃথিবীতে কী হচ্ছে– সেই বিষয়েও আমাদের জানান দেয় একটি ছবি।
দিবসটি ফটোগ্রাফির প্রযুক্তিগত দিক, অগ্রগতি এবং ফটোগ্রাফিক কৌশলগুলোর বিবর্তন নিয়ে আলোচনা করার একটি দিন।
কোনো ছবি যেদিন তোলা হয়, সেদিনও যেমন প্রশংসিত হতে পারে, আবার সেই একই ছবি যুগ যুগ পরেও একইভাবে প্রশংসিত হতে পারে।
নিপস ফটোগ্রাফি উদ্ভাবনের কাজ প্রথমে শুরু করলেও সর্বপ্রথম ছবি তোলার ব্যবহারিকের গুরুত্ব এবং উপায় আবিষ্কার করেন ফ্রেঞ্চ বিজ্ঞানী লুইস দাগুয়ের। আর তার নামানুসারে ছবি তোলার এই উপায়ের নাম দেওয়া হয় ‘দাগুয়েরো টাইপ’ ফটোগ্রাফি।
নিপস সর্বপ্রথম সিলভার ক্লোরাইড এবং সিলভার হ্যালাইড ফটোগ্রাফি নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেছিলেন। গবেষণার এক পর্যায়ে ১৮২৬ সালে প্রথম সত্যিকারের ক্যামেরা ছবি তুলতে সফল হন নিপস।
তিনি বিটুমেন দিয়ে লেপা পিউটারের একটি শিট ব্যবহার করেছিলেন, যার জন্য কমপক্ষে আট ঘণ্টা এক্সপোজার সময় প্রয়োজন হয়, নিপসের এই হেলিওগ্রাফকে আলোকচিত্রের ইতিহাসে প্রাচীনতম আলোকচিত্র হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
এটি ডিজিটালি শুরু করেন অস্ট্রেলীয় আলোকচিত্রী কোরস। তিনি সারা পৃথিবীর সব আলোকচিত্রীদের একত্রিত করার লক্ষ্যে ওয়ার্ল্ড ফটো ডে’ আয়োজন করে ২০০৯ সালে। এর মাধ্যমে ২০১০ সালের ১৯ আগস্ট প্রথম অনলাইন গ্যালারির আয়োজন করা হয়।
বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবসের লক্ষ্য হলো সচেতনতা বৃদ্ধি করা, ধারণা শেয়ার করা এবং মানুষকে তাদের আবেগকে গুরুত্ব সহকারে নিতে অনুপ্রাণিত করা।
দিনটিকে স্মরণ করতেই শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ফটোগ্রাফির অগ্রযাত্রায় যেসব মানুষ নিরলস কাজ করে গেছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই পালন করা হয় ‘বিশ্ব ফটোগ্রাফি দিবস’।