মো:ইউনুছ কবির-
রংপুরের কাউনিয়ায় চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী সানজিদা ইভা হত্যার ঘটনায় এক দিনের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। দশম শ্রেণির এই শিক্ষার্থী হত্যায় একজন নয় তার তিনজন কথিত প্রেমিক জড়িত বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) আদালতে গ্রেফতারকৃত আসামি নাহিদুল ইসলাম ওরফে সায়েম সানি (১৯) স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে সানি বলেছেন, তিনি ও সানজিদার আরও দুই কথিত প্রেমিক পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে সানজিদাকে হত্যা করেছেন।
নিহত স্কুলছাত্রী সানজিদা আক্তার ইভা (১৬) কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের গড়াই গ্রামের ইব্রাহিম খানের মেয়ে। ইভা পীরগাছার বড়দরগা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী ছিলেন।
পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, আদালতে জবানবন্দি দেওয়া সানির সঙ্গে ৩ বছর আগে সানজিদার পরিচয় ও সম্পর্ক হয়। বেশ কিছুদিন আগে তাদের সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলেও যোগাযোগ অব্যাহত থাকে। ঘটনার দিন মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে সায়েম সানজিদাকে নিয়ে রংপুরে শাপলা সিনেমা হলে সিনেমা দেখতে যান। সেখানে সানজিদার নতুন প্রেম নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে সানজিদা সিনেমা হল থেকে চলে যান।
ঘটনার দিন সানজিদার রাগ ভাঙিয়ে আবার পীরগাছার আলীবাবা থিম পার্কে ঘুরতে যান সায়েম। সে সময় তিনি কৌশলে এই স্কুল পড়ুয়া কিশোরীর আরও দুই প্রেমিককে ডেকে আনেন। এ বিষয়টি সানজিদা টের পাননি। তারা অন্যত্র লুকিয়ে ছিলেন। পরে থিম পার্কে ঘোরাফেরা করতে করতে রাত হয়ে যাওয়ায় সানজিদা ফিরে যাওয়ার জন্য সায়েমকে চাপ দেন। এরপর মধুপুর রোডের একটি ফাঁকা জায়গায় সানজিদাকে নিয়ে তার একাধিক প্রেম নিয়ে সায়েম ও অপর দুই প্রেমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় উত্তেজিত হয়ে তারা মিলে সানজিদাকে উপুর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) আশরাফুল আলম পলাশ জানান, গ্রেফতারকৃত সায়েম হত্যার সাথে তার সম্পৃক্ততা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরও এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রক্তাক্ত অবস্থায় কুর্শা ইউনিয়নের শিবু কুটিরপাড় বাজারের পাশে টেপামধুপুরগামী রাস্তায় পরে থাকা অজ্ঞাত ওই কিশোরীকে দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে কাউনিয়া থানায় খবর দিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে কাউনিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।