স্টাফ রিপোর্টার-
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় ধরলা নদীতে নির্মিত শেখ হাসিনা ধরলা সেতুতে সন্ধ্যার পর জ্বলে না কোন আলো। নির্মাণ কাজ শেষে সেতুটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার পর কিছুদিন বাতি জ্বললেও বর্তমানে অন্ধকারেই শঙ্কা নিয়ে পারাপার হচ্ছেন স্থানীয় পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহন। অন্ধকারের কারণে সেতুটির উপরে প্রায়ই ছিনতাইয়ের মত ঘটনাও ঘটছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসলেও আমলে নিচ্ছেন না তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,শেখ হাসিনা ধরলা সেতুটি ২০১৮ সালের ৩ জুন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ১৯৬ কোটি ৭৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। এটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর। যার দৈঘ্য ৯৫০ মিটার,প্রস্থ ৩২ ফুট।
সেতুর সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও রাতের বেলায় নির্বিঘ্নে পথচারীসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করার জন্য লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করার কথা ছিল। কিন্তু নিম্নমানের বাতি ব্যবহারের কারণে তা উদ্বোধনের কিছু দিন যেতে না যেতেই নষ্ট হয়ে যায়। এদিকে সেতুটি রাতের বেলা অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকার কারণে সেখানে দিন দিন বখাটের আনাগোনা বাড়ছে। সেতুর পার্শ্ববর্তী কিছু অসাধু ব্যক্তির সহযোগিতায় অনেক সময় সেতুর ওপরে বসে মাদকের আসরও। যার ফলে স্থানীয় পথচারীরা আতঙ্ক নিয়েই সেতু পারাপার হয়। অনেকে আবার ছিনতাইয়ের ভয়ে সন্ধ্যার পরে সেতু দিয়ে যাতায়াত না করার চেষ্টা করেন।
সেতুর পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, সেতুর বিদ্যুতায়নের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ৬৫ লাখ ৪ হাজার ২১০ টাকা। অথচ উদ্বোধনের কিছু দিন যেতে না যেতেই বাতি বন্ধ হয়ে যায়। নিম্নমানের সামগ্রি ব্যবহারের ফলেই এমনটা হয়েছে বলে তারা দাবি করছেন।এরপরেও ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ৮০ হাজার টাকায় ব্যয় করে বাতিগুলো সংস্কার করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখন আবারও ভূতুরে অবস্থায় পরিণত হয়েছে সেতুটি।
বর্তমানে সেতুর পশ্চিম পাশে ২১টি ও পূর্ব পাশে ২০টি স্টিলের পিলারের একটি বাতিও জ্বলছে না। অভিযোগ রয়েছে নিম্নমানের তার লাগানোর কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে সেতুটি খুলে দেওয়ার পর থেকে দর্শনার্থীরা বিনোদনের স্থান করে নিয়েছেন শেখ হাসিনা ধরলা সেতু। এখন সেতুর বাতিগুলো না জ্বলায় দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে সৌন্দর্য। বিশেষ করে যানবাহন চালক, এলাকাবাসী, পথচারী,ব্যবসায়ী মহল ও দর্শনার্থীরা দ্রুত বাতিগুলো সংস্কারের আবেদন জানান।
স্থানীয় অটো চালক আব্বাস আলী জানান, সন্ধ্যায় সেতুর উপরে বাতিগুলো নষ্ট থাকায় আমাদের চলাফেরা কষ্ট হচ্ছে। ছিনতাইয়ের মত ঘটনা ঘটছে। মাদকসেবীদের আড্ডায় পরিণত হয়েছে প্রায়
১কিমি সেতুটি। সেতুর বাতিগুলো দ্রুত ভালো করলে রাতে মাদকসেবীদের আনাগোনা কমে যাবে। আমরা নির্ভয়ে আমাদের মালামাল আনা নেওয়া করতে পারবো ও অনেক সুবিধা হবে।
নাম প্রকাশ না করতে বলায় তিনি বলেন, সেতু সড়কে সোলার প্যানেল বাতি স্থাপনের দাবি জানিয়ে বলেন, কতিপয় অসাধু লোকের কারণে আজ সেতুতে বাতি জ্বলছে না। তারা কখনোই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নে বিশ্বাসী নয়। তারা সরকারের উন্নয়নকে বাঁধাগ্রস্ত করার জন্য এ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
উপজেলা প্রকৌশলী আসিব ইকবাল রাজীব জানান, শেখ হাসিনা ধরলা সেতু সংযোগ সড়কটি এলজিইডি থেকে উন্নয়ন করা হলেও এখন পর্যন্ত গেজেট না হওয়ায় মেনটেনেন্স করা সম্ভব হয়নি। গেজেটভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এটি হলে সেতুর অন্যান্য টুকটাক কাজসহ লাইটিংএর কাজগুলো দ্রুত ঠিক করা হবে।