মোঃরিদওয়ান নুর রহমানঃ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির সাপ দেখা মিলছে। এসবের মধ্যে বিষধর গোখরা সাপের আনাগোনা বাড়ায় আতঙ্ক বিরাজ করছে শিক্ষার্থীদের মাঝে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের অধিকাংশ জায়গা ঝোপঝাড় আর জঙ্গলে আবৃত। এসব জায়গায় মানুষের চলাচল না থাকায় বিভিন্ন প্রজাতির বিষাক্ত সাপ ও বিষধর পোকামাকড়ের বাস।
শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, ক্যাম্পাসে প্রবেশের প্রধান ফটকের সামনে দিনের বেলায় পরপর দুই দিন দুটি বিষধর সাপ মেরে ফেলা হয়। পরিবহন পুল, ছেলেদের আবাসিক হল, একাডেমিক ভবনসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন রাস্তায় দেখা মিলছে বিষধর সাপের। সবমিলিয়ে গত সাতদিনে অন্তত দশটি সাপ মেরে ফেলা হয় ক্যাম্পাসে। এতে আবাসিক হলসহ রাস্তাঘাটে চলাচল অনেকটা অনিরাপদ হয়ে পড়েছে।
শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঝোপঝাড় ঠিকমতো পরিস্কারের অভাব ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় দিন দিন বেড়েই চলছে বিষাক্ত সাপের উপদ্রব। আমরা সব সময় আতঙ্ক নিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছি। এসব বিষধর সাপের কামড়ে কারো মৃত্যু হলে কি প্রশাসন এর দায়ভার নিবে?
ক্যাম্পাসে সবচেয়ে বেশি দেখা মিলছে বিষধর গোখরা সাপের। যার বৈজ্ঞানিক নাম নাজা নাজা (Naja naja)। বাংলাদেশের স্থানীয় নাম খড়মপায়া বা খইয়া (খৈয়া) গোখরা। সাপে কাটার সংখ্যা বিচারে এটি অন্যতম একটি সাপ। এর বিষ মূলত একটি শক্তিশালী পোস্ট-সিনাপটিক নিউরোটক্সিন এবং কার্ডিওটক্সিন সমৃদ্ধ বিষ। বিষটি স্নায়ুর সিনাপটিক ফাঁকগুলিতে কাজ করে, ফলে পেশী পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয় এবং গুরুতর কামড়ের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের মত বিপদ দেখা দেয়। বিষ উপাদানে hyaluronidase এনজাইম অন্তর্ভুক্তির ফলে লাইসিস ঘটে এবং বিষ ছড়ানো বৃদ্ধি পায়। দংশনের পরে পনের মিনিট এবং দুই ঘন্টার মধ্যে বিষক্রিয়ার লক্ষণগুলি প্রকাশিত হতে পারে।
পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার মোঃ শাহীন মিয়া বলেন, আমাদের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এসব ঝোপঝাড় কাটার কাজ চলমান। জনবল সংকটের কারণে একযোগে কাজ করতে পারি না, ফলে একদিকে কাটা শেষ না হতেই অন্যদিকের ঝোপঝাড় বেড়ে যায়। তবে সাপের উপদ্রবের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থার কথা জানাতে পারেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক নুরুজ্জামান খান বলেন, ক্যাম্পাসে সাপ দেখা যাওয়ার ব্যাপারটি শুনেছি। এ বিষয়ে উপাচার্য মহোদয়ের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করবো। এই মৌসুমে সবাইকে সতর্কভাবে ক্যাম্পাসে চলাচলের জন্যও আহবান জানান তিনি।