31.1 C
Rangpur City
Saturday, September 21, 2024
Google search engine
Homeশিক্ষাকবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (সংক্ষিপ্ত জীবনী)

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য (সংক্ষিপ্ত জীবনী)

সাজেদুল করিম
বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবিদের মধ্যে অন্যতম কবি হলেন সুকান্ত ভট্টাচার্য | তিনি তাঁর জীবনকালে যা কিছু সাহিত্যসৃষ্টি করে গেছেন তা সত্যিই অনবদ্য তিনি মূলত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, মন্বন্তর, ফ্যাসিবাদ আগ্রাসন ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রভৃতির বিরুদ্ধে সেই সময় সাহিত্য চর্চা শুরু করেন | তাঁর সমস্ত সাহিত্য কর্ম আজও প্রত্যেক বাঙালি পাঠকের হৃদয় স্পর্শ করে।

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্ম – ১৫ই আগস্ট, ১৯২৬ কোলকাতার কালীঘাট অঞ্চলের অন্তর্গত ৪৩নং মহিম হালদার স্ট্রিটে মামার বাড়িতে | তাঁর পৈত্রিক বাড়ি ফরিদপুর জেলার উনশিয়া গ্রামে | সুকান্তের বাবার নাম নিবারণ ভট্টাচার্য। তাঁর বাবা গ্রন্থাগারের মালিক ছিলেন । মায়ের নাম সুনীতি দেবী, (গৃহিণী)।

পরিবারে ছয় ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয় | তিনি তাঁর বড় দাদা মনমোহন এবং বৌদি সর্জু দেবীর বড় আদরের ছিলেন | তাঁর জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একজন মানুষ ছিলেন রানীদি | সেইসময়ের বিখ্যাত কথাসাহিত্যিক মনিন্দ্রলাল বসুর “সুকান্ত” গল্পটি পড়ে, তিনি তাঁর নাম রেখেছিলেন সুকান্ত |

তাঁর প্রিয় রানীদির জন্যই তিনি সাহিত্যকর্মের প্রতি আকৃষ্ট হন | দুর্ভাগ্যবশত তাঁর রানীদি তাঁর কোনো সাহিত্যকর্মই দেখে যেতে পারেননি, তাঁর দিদির মৃত্যুর কিছুদিন পরেই মা সুনীতি দেবীও মৃত্যু বরণ করেন |

পরপর চোখের সামনে দুটো মৃত্যু, কবিকে ভীষণ শোকাহত এবং মর্মাহত করেছিল। তাঁর মানসিক অবস্থা বিধ্বস্ত হয়।এই সময় তিনি রচনা করেন বহু কবিতা | সে সময় সেইসব কবিতাই ছিলো তাঁর একমাত্র সঙ্গী |

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের শিক্ষা জীবন শুরু হয় কলকাতার কমলা বিদ্যামন্দির থেকে | তাঁর লেখা প্রথম লেখা ছোটগল্প প্রকাশিত হয় বিদ্যালয়ের পত্রিকা “সঞ্চয়ে” | তারপর তিনি ভর্তি হন বেলেঘাটা দেশবন্ধু হাইস্কুলে | ১৯৪৫ সালে তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেন ও দুর্ভাগ্যক্রমে তিনি অকৃতকার্য হন |

স্কুল জীবন থেকেই কবি সুকান্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন | এ সময় ছাত্র আন্দোলন ও বামপন্থী রাজনৈতিক কাজের সাথে জড়িত থাকার জন্য, তাঁর পড়ার লেখার পরিসমাপ্তি ঘটে । ফ্যাসিবাদী আগ্রাসন, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও অনৈতিক ব্রিটিশ শাসন প্রভৃতির বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ছিলেন |

১৯৪১ সালে সুকান্ত ভট্টাচার্য কলকাতা রেডিও আয়োজিত “গল্পদাদুর আসর” নামক এক অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। প্রথমে তিনি রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি করতেন | যখন রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু হয়, তখন সেই আসরেই তিনি নিজের লেখা কবিতা পাঠ করে তাঁকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

১৯৪৪ সালে তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন | সে বছরই “আকাল” নামক একটি সংকলন গ্রন্থ সম্পাদনা করেন এবং শোষিত মানুষের জীবন, ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য সংগ্রাম, সমাজের দুর্দশা ও শোষণ মুক্ত স্বাধীন সমাজের স্বপ্ন প্রভৃতি বিষয় নিয়ে কবিতা লেখেন |
মাত্র এগারো বছর বয়সে তিনি “রাখাল ছেলে” নামে একটি গীতি নাট্য রচনা করেন। পরে “হরতাল” নামক গ্রন্থে সংকলিত হয় |
তাঁর রচনাবলীর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য- ছাড়পত্র (১৯৪৭), গীতিগুচ্ছ (১৯৬৫), পূর্বাভাস (১৯৫০), মিঠেকড়া (১৯৫১), অভিযান (১৯৫৩), ঘুম নেই (১৯৫৪), হরতাল (১৯৬২), ইত্যাদি। পরবর্তী সময়ে উভয় বাংলা থেকেই “সুকান্ত সমগ্র” নামে তাঁর রচনাবলী প্রকাশিত হয় ।

অত্যধিক পরিশ্রম করার ফলে নিজের শরীরের উপর যে অত্যাচারটুকু তিনি করেন তাতে তাঁর শরীরে প্রথমে ম্যালেরিয়া ও পরে দুরারোগ্য যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হন | এবং ১৩ই মে, ১৯৪৭ সালে কলকাতার ১১৯ নম্বর লাউডট স্ট্রিটের অন্তর্গত “রেড এড কিওর হোমে” মাত্র ২১ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন |

Google search engine
News Desk
News Deskhttps://sotterkontho24.com/
রোড নংঃ ৫/১, বাসা নংঃ ৩৮৮, হোল্ডিং নংঃ ৪৪৫ স্টেশন রোড, আলমনগর, পীরপুর, রংপুর। মোবাইলঃ ০১৭৩৬৫৮৫৭৭৭
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

জনপ্রিয় নিউজ

সাম্প্রতিক মন্তব্য