ঋতুর পরিবর্তনে প্রকৃতি সযতনে নিজেকে পরিয়ে নেয় ভিন্ন ভিন্ন সাজে। রুদ্র কঠোর সাজ গ্রীষ্ম কালের। ক্রন্দসী নারীর মত সজল শোকাতুরা বর্ষাকালে। সাদা মেঘের ভেলায় চড়ে ঝলমল করে হেসে ওঠে শরৎকালে।প্রকৃতি হয় দেবী অন্নপূর্ণা হেমন্তে পাকা ফসলের সম্ভারে। শীতে পড়ে সে বৈরাগ্যের বেশ। বৈরাগ্যের ধ্যান ভেঙে কঠোর সাধনা শেষ করে প্রকৃতি যেন রূপে-রঙে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে বসন্তে।
আজ ১লা ফাল্গুন, সোমবার,১৪২৮ বঙ্গাব্দ । বাংলা পঞ্জিকার একাদশতম মাস ফাল্গুনের প্রথম দিন ও বসন্তের প্রথম দিন।
শুষ্ক শীতের পরে আসে রঙে রঙিন বসন্ত ঋতু। চারদিক গাছে গাছে নতুন পাতা আর ফুলের সমাহার বিরাজমান। বাঙালির প্রিয় ঋতু বসন্ত। বসন্ত ফিরে ফিরে আসে বাংলার বুকে নানা রঙে ও নানা রূপে। কবির কবিতায়, শিল্পীর রং তুলির আঁচড়ে ফুটে ওঠে বসন্তের অপরূপ সৌন্দর্য। বসন্তের বাতাস, বসন্তের ফুলের সুবাস মুগ্ধ করে তোলে। কোলাহল শহরেও মাঝেমধ্যেই শোনা যায় কোনো কোনো গাছের ডালে লুকিয়ে বসে কোকিল ডাকে কুহু কুহ করে।
বাংলাদেশে বসন্ত উৎসব পালনের রীতি চালু হয় ১৪০১বঙ্গাব্দ থেকে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়কাল থেকেই পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে বিশেষ নৃত্যগীতের মাধ্যমে বসন্ত উৎসব পালনের রীতি চলে আসছে। বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়বসন্ত বরণ উৎসব।
বাঙালি চেতনাকে জাগ্রত করতে সবাই শাড়ি-পাঞ্জাবি পরিধান করে ফুলেল সাজে রঙিন হয়ে ওঠে। নারীর কপালের সিঁদুর, কুমকুমের টিপ, পায়ের আলতা, শাড়ির সাথে চুড়ি, আর ফুলের গয়না আমাদের মনে করিয়ে দেয় আমরা বাঙালি। নাচ-গানের ছন্দ আমাদের মনে জাগিয়ে তোলে অপার আনন্দ। আমরা মনের সব দুঃখ-কষ্ট ও জীবনযুদ্ধ ভুলে মেতে উঠি ফাগুন উৎসবে।