মো:রিদওয়ান নুর রহমান, রংপুর মহানগর প্রতিনিধি-
জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, সারের মুল্য বৃদ্ধি, শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি, অনাবৃষ্টি ও আমন কাটা–মাড়াইয়ের সময় ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ার আশঙ্কায় বাড়তি ব্যয় নিয়ে রংপুরের কৃষকেরা আগাম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
জেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে- রংপুরের আট উপজেলায় এবার আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৩৬ হেক্টর। চাষির সংখ্যা ২ লাখ ১৫ হাজার। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১ লাখ ২১ হাজার ৮৬৫ হেক্টর জমিতে আমন চারা রোপণ করা হয়েছে। এর মধ্যে বৃষ্টির অভাবে সম্পূরক সেচ দিয়ে আমন লাগানো হয়েছে অন্তত ১৫ হাজার হেক্টরে। মূলত আমন বৃষ্টিনির্ভর আবাদ। এ কারণে সম্পূরক সেচ দিয়ে ওই আবাদ করায় এবার ধান উৎপাদনে ব্যয় আরও বাড়বে।
রংপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বলেন- আমন বৃষ্টিনির্ভর আবাদ। কিন্তু এবার তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় অনেকে সম্পূরক সেচ দিয়ে আমন লাগাচ্ছেন। ইউরিয়া সারসহ ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খরচ কিছুটা বাড়বে।
জানা গেছে, প্রতি হেক্টরে আমন চাষ করতে গড়ে ইউরিয়া লাগে ১৮০ কেজি। এ হিসাবে জেলায় ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬৩৬ হেক্টরে আমন চাষে ইউরিয়া লাগবে ২ কোটি ৯৯ লাখ ৯৪ হাজার ৪৮০ কেজি। প্রতি কেজি ইউরিয়ায় ৬ টাকা বেড়ে যাওয়ায় এবার শুধু আমন উৎপাদনে জেলার কৃষকদের অতিরিক্ত ব্যয় হবে ১৭ কোটি ৯৯ লাখ ৬৬ হাজার ৮৮০ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি ইউরিয়া খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ২২ টাকায়।
কৃষকেরা জানান- এবার আমন লাগানো থেকে ফসল ঘরে ওঠা পর্যন্ত প্রতি একরে খরচ পড়বে কমপক্ষে ৩৬ হাজার টাকা। গত আমন মৌসুমে খরচ হয়েছিল ২৫ হাজার টাকা। ইউরিয়া সার, ডিজেল, শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি ও জমিতে সম্পূরক সেচ ও চাষে খরচ বৃদ্ধির কারণে বাড়তি ওই খরচ হবে। অনুকূল পরিবেশ বজায় থাকলে এলাকায় প্রতি একরে গড়ে ধান পাওয়া যাবে ৫৫ মণ। এতে উৎপাদনে খরচ হবে ৩৬ হাজার টাকা। এ হিসাবে প্রতি মণ (২৮ কেজি) ধান উৎপাদনের সম্ভাব্য খরচ পড়বে ৬৫৪ টাকা।