20.9 C
Rangpur City
Sunday, December 22, 2024
Google search engine
Homeমতামতঅহেতুক লাগামহীন নিত্যপণ্যের দাম, প্রান্তিক মানুষের 'মাথায় হাত'

অহেতুক লাগামহীন নিত্যপণ্যের দাম, প্রান্তিক মানুষের ‘মাথায় হাত’

এস এম নাজের হোসাইন
ভাইস প্রেসিডেন্ট, কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)

সম্প্রতি জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেট ঘোষিত হয়েছে। প্রতি বছর আমরা লক্ষ্য করতাম বাজেট ঘোষণার পরপরই বেশ কিছু পণ্যের দাম বেড়ে যেত। তবে বেশ কয়েক বছর সরকার কিছু প্রাক-প্রস্তুতির কারণে সে চিরাচরিত চিত্রটি আর দেখা যায়নি। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য এবছর কিন্তু বাজেটে নিত্য পণ্যের উপর কর আরোপ করা হয়নি। অনেকগুলি ক্ষেত্রে কর রেয়াত ঘোষণা করা হলেও এবছর বাজেট ঘোষণার পরও বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়ে যায়। আবার যে সমস্ত পণ্যে কর রেয়াত দেয়া হয়েছে সে সমস্ত পণ্যগুলির দামে কোনো প্রভাব পড়েনি। ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা ক্রমে তারা বলেন এসমস্ত পণ্যগুলি তাদের বেশি দামে কেনা। আমরা প্রায়শঃ দেখি বাজেটে বিভিন্ন পণ্যের শুল্ক হ্রাসর প্রস্তাব করা হলেও বাজেট ঘোষণার পর দিন থেকেই বেশকিছু পণ্যের দাম বেড়ে যায়। ঢালাওভাবে নিত্য ভোগ্য পণ্যের সম্পূরক শুল্ক আরোপ বহাল থাকলে দেশীয় শিল্প সুরক্ষা কমার আশঙ্কা এবং যে সমস্ত পণ্য দেশে উৎপাদিত হয় না এবং যেসব শিল্প উৎপাদনে দেশীয় দক্ষতা অর্জিত হয়নি, তাদের সুরক্ষা দিতে সম্পূরক শুল্ক আরোপ ভোক্তা স্বার্থ পরিপন্থী।

তবে পৃথিবী ব্যাপী দীর্ঘ দেড় বছরের অধিক সময় ধরে করোনাভাইরাস এর যে মহামারী চলমান রয়েছে, তাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে দেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার উপর। দেশের নিম্ন- মধ্য আয়ের মানুষ থেকে সাধারণ খেটে খাওয়া অসহায় গরীবদের অবস্থা একেবারে নাজুকই। ক্ষুদ্র ব্যবসা, চাকুরী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের কাজের বাজারে চলছে খরা। বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার গবেষণার তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, প্রায় দেড় কোটির অধিক মানুষ নতুন করে অতিদরিদ্রের কাতারে চলে এসেছে। গরিবের তালিকাও দীর্ঘ হচ্ছে। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এর জরিপের তথ্য মতে, করোনার পরবর্তী সময়ে মোট জনগোষ্ঠীর ৪০ শতাংশ এখন দরিদ্র। আবার পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পি পি আর সি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ গভর্নেন্স এন্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) আরেকটি জরিপ অনুসারে, মহামারীর প্রভাবে দুই কোটি ৪৫ লাখ মানুষ নতুনভাবে দরিদ্র হয়ে গেছে। মহামারীর কারণে অনেকে তাদের চাকরি হারিয়েছেন, না হয় কর্তিত বেতনে তাদের চলতে হচ্ছে। সঞ্চয় ভেঙ্গে ও ধার-দেনায় সংসার চালালেও নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দাম ও সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়ের খরচ বেড়ে গেছে। অনেকে নগরজীবনের দৈনন্দিন খরচ মেটাতে না পেরে কম খরচের বাসায় উঠেছেন, কিংবা স্থায়ীভাবে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন। এই শ্রেণী মহা কষ্টে থাকলেও লোকলজ্জার ভয়ে না পারে কারো কাছে কিছু চাইতে, না পারে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সহায়তা নিতে।

এ অবস্থায় দেশের নিত্যপণ্যের বাজার সহনীয় পর্যায়ে রেখে সাধারণ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার প্রয়োজন ছিল সেখানে রীতিমতো প্রতিযোগীতা দিয়েই যেন বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে। এ প্রতিযোগিতায় শাকসবজির কাঁচা বাজারও পিছিয়ে নাই। সম্প্রতি বেশকিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত বাজারের তুলনামূলক মূল্য চিত্র দেখে সহজে অনুমান করা যায় অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য কি হারে বাড়ছে। বাজেট ঘোষণার পরে দেখা যায়, নিত্যপণ্য আটা- ময়দা, পেঁয়াজ, আদা, রসুন ডিম ও শিশুখাদ্য, গুড়াদুধ সহ ১৩ টি নিত্যপণ্যের মাত্রাতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, যার কোনো যুক্তিসংগত কারণ নেই এবং একেবারে অগ্রহণযোগ্য। এর ফলে দেশের সাধারণ ও প্রান্তিক মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। করোনার কারণে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল-এবারের জাতীয় বাজেটে নিত্যপণ্যের দাম কমানোর সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ থাকবে। কিন্তু দুঃখ ও হতাশার বিষয় হলো, সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী সরকারের পক্ষ থেকে নিত্যপণ্যের অনেকগুলি ক্ষেত্রে নতুন করারোপ করা না হলেও বাজারে হঠাৎ করে দ্রব্যমূল্যের লংজাম্প পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য।

নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির ঘটনায় প্রান্তিক ও খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের উদ্বিগ্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক। ক্রয় ক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গতিহীন ভাবে বাজারে পণ্যের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে প্রান্তিক ও শ্রমজীবীরা অসহায় বোধ করেন। তবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। বলা চলে বাজার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সরকারের শক্ত কোন ভূমিকা নেই বললেই চলে। অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে কথাবার্তা উঠলেই পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা পরস্পরকে দোষারোপ করে থাকেন। এভাবে এক পক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করলেও এটি মূলত ব্যবসায়ীদের একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণের প্রয়াস, এতে কোন সন্দেহ নেই। ব্যবসায়ীরা সংঘবদ্ধভাবে নানা অপকৌশলে ভোক্তাদের ঠকানো ছাড়াও কারসাজি ও যোগসাজশের মাধ্যমে পুরো বছর ব্যাপী নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া শুধু অনৈতিক তো বটেই, সেইসঙ্গে অপরাধও।

আমরা দেখেছি, গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে অতীতে বহুবার সময় ও সুযোগের সদ্ব্যবহার করে নিত্যপণ্য সহ বিভিন্ন পণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করার অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। এবারও নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি, বৃষ্টি ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার দোহাই দিয়ে সরবরাহব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এটি একটি ঠুনকো অজুহাত, এতে কোন সন্দেহ নেই। মূলত পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা মিলে ভোক্তাদের পকেট কাটার উদ্দেশ্যেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে এমন প্রসঙ্গের অবতারণা করে থাকেন। তবে মনে রাখা প্রয়োজন- যোগসাজশের মাধ্যমে বাজারব্যবস্থার স্বাভাবিক গতি বাধাগ্রস্থ করা হলে একদিকে যেমন সাধারণ ভোক্তা স্বার্থের হানি ঘটে, অন্যদিকে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে।

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মূল কাজ হলো নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করা। প্রতিবছর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে রমজান, ঈদ ও কুরবানীর সময় নিত্য পণ্যের মজুদ,দর, সরবরাহ ও আমদানি নিয়ে সভা আহবান করেন। বাণিজ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এসব সভায় সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিনিধি, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই, বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন, পাইকারি বাজার সমিতি, খুচরা বিক্রেতাদের প্রতিনিধি, আমদানিকারক, মিল মালিক, সরবরাহকারী সহ অনেককে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু ভোক্তাদের প্রতিনিধি হিসেবে কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর প্রতিনিধিকে সভায় সেভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয় না। সেখানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সরাসরি ব্যবসায়ীদের পক্ষে অবস্থান নেন।

আবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি সংস্থার বাজার মনিটরিং টিম কাজ করলেও তাতে ভোক্তা পর্যায়ে তেমন সুফল আসেনা। কারণ এসমস্ত মনিটরিং টিম গুলি বাজারের পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহ না করে বাজারে যান। আবার বাজারে প্রবেশের আগে বাজার সমিতি ও চেম্বার গুলিকে অবহিত করে যান। ফলে বাজার সমিতি ব্যবসায়ীদের আগেভাগেই সতর্ক করে দেন। ফলে মনিটরিং টিম বাজারে তেমন কোনো ত্রুটি পান না। আবার স্বল্প সময়ে বাজারে অবস্থান করলে, অনিয়ম বের করা কঠিন। সে কারণে এসব টিম বাজার মনিটরিং করে ফিরে যাওয়ার পরই বাজার আগের অবস্থানে চলে যায়। বাজার মনিটরিং হওয়া উচিত পুরো বছর জুড়ে।

ব্যবসায় মুনাফা অর্জন স্বতঃসিদ্ধ ও স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। তবে ব্যবসায়ীদের শুধুমাত্র মুনাফা অর্জনের নামে নীতি জ্ঞানহীন কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার ভাবনা থেকে বিরত থাকলে বছরের অধিকাংশ সময়ে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল থাকবে বলে আমাদের বিশ্বাস। সরকার এবারের বাজেটে নতুন কোন কর আরোপ না করলেও বাজেট প্রস্তাব এর মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে চাল, ডাল, গুঁড়াদুধ সহ ১৩ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ঘটনা এটাই প্রমাণ করে যে, ব্যবসায়ীরা নিজেদের মুনাফা বৃদ্ধি করার বাইরে অন্য কিছু ভাবতে চান না। তাদের মুনাফা ই একমাত্র লক্ষ, জনস্বার্থ বিবেচ্য নয়। ব্যবসায়ীদের এহেন আচরণ ও কর্মকান্ড অযৌক্তিক তো বটেই; অমানবিক ও বটে। আমাদের প্রত্যাশা ব্যবসায়ীরা এ ধরনের মানসিকতা পরিহার করে নিত্যপণ্য সহ সবধরনের পণ্য ও সেবার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে আন্তরিকতার পরিচয় দেবেন। তবে, ব্যবসায়ীরা নিজেরাই যৌক্তিক বিবেচনায় নিত্যপণ্যের দাম না কমালে সরকার বা স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোরভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিতে হবে।

ব্যবসায়ীরা বাজেটের বহু পূর্বেই নিত্য পণ্যের মজুদ, সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সেজন্য এ ধরনের মজুতদারদের কারসাজি বন্ধে নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়িয়ে জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সত্যিকার অর্থে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নিত্যপণ্যের বাজার মূল্য তদারকির কাজ টি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার দায়িত্ব বিবেচনার নির্দেশনা প্রদান করতে হবে। এছাড়াও নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় ও স্থিতিশীল রাখা সরকারের একটি অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার হলেও এই অঙ্গীকার পূরণে সরকারের রাজনৈতিক দৃশ্যমান উদ্যোগ প্রয়োজন। যেহেতু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সুরক্ষায় নিয়োজিত থাকেন আর ব্যবসায়ীদের স্বার্থ সুরক্ষা করতে গিয়ে অনেক সময় সাধারণ ভোক্তাদের স্বার্থ গৌণ হয়ে যায়। যার খেসারত দিতে হয় ১৮ কোটি ভোক্তাকে। তাই দেশের সাধারণ ভোক্তাদের অধিকার ও স্বার্থ সংরক্ষণে পৃথকভাবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হলে দেশীয় ভোক্তরা অনেক বেশি উপকৃত হবে। ভোক্তাদের মনোবেদনা ও ভোগান্তির বিষয়গুলি দ্রুত সরকারের নজরে আসা ও সমাধান অনেক বেশি সহজতর হবে।

নিত্যপণ্যের অস্থিরতা রোধে সংকটকালীন সময়ে সরকারের জরুরি পরিকল্পনা থাকা উচিত। আপদকালীন সময়ে খাদ্য বিভাগের আওতায় ওএমএস, টিসিবির মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে বিকল্প বাজার চালু রাখা দরকার। বাজার তদারকিতে জেলা প্রশাসন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, চেম্বার, ক্যাব প্রতিনিধি, গণমাধ্যমসহ সরকারের অন্যান্য প্রশাসনিক অঙ্গগুলিকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। এছাড়াও বিদেশ থেকে আমদানিকৃত খাদ্য-পণ্য কি পরিমান ও কারা আমদানি করছেন তাদের বিতরণ ব্যবস্থা ও মনিটরিং করতে হবে। ভোক্তাদের শিক্ষা ও সচেতনতায় আরো বেশি জোর দিতে হবে। ভোক্তারা সচেতন হলেই ব্যবসায়ীদের কৃত্রিম সংকট, কারসাজি ও কূটকৌশল বুঝতে সক্ষম হবে।।

ব্যক্তিগত কোন লেখা বা মতামতের ক্ষেত্রে সম্পাদক দায়ী নয়। এর সমস্ত দায়ভার লেখকের।

News
Newshttps://sotterkontho24.com/
রোড নংঃ ৫/১, বাসা নংঃ ৩৮৮, হোল্ডিং নংঃ ৪৪৫ স্টেশন রোড, আলমনগর, পীরপুর, রংপুর। মোবাইলঃ ০১৭৩৬৫৮৫৭৭৭
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

জনপ্রিয় নিউজ

সাম্প্রতিক মন্তব্য