দেশে ১০ জুন,২০২১ বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একসঙ্গে প্রথম পর্যায়ে নির্মিত ৫০টি মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।ইসলামের প্রচার,প্রসার এবং মসজিদকে জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে সরকার। এই প্রকল্পের আওতায় প্রথম ধাপে নির্মিত ৫০টি মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।একসঙ্গে এতগুলো মসজিদ নির্মাণের ঘটনা বিশ্বে বিরল বলে জানান প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ।
শুধু নামাজ আদায় নয়, মসজিদ হবে গবেষণা ইসলামী সংস্কৃতি ও জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র। হারিয়ে যাওয়া ইসলামের চিরায়ত এই ঐতিহ্যকে ধারণ করে দৃষ্টি নন্দন এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার।প্রথম ধাপে নির্মিত মডেল মসজিদগুলো উদ্বোধন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমি সত্যি খুব আনন্দিত। মডেল মসজিদগুলো থেকে ইসলামের সঠিক মর্মবাণী প্রচার হবে, ইসলামের সঠিক প্রচার হবে। ইসলামের সঠিক জ্ঞানচর্চা হবে। জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায় মুসলমানরা আবারও এগিয়ে যাবে।
রাজধানী ওসমানী স্মৃতি মিলনায়ন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, মুসলিম বিশ্বের এই প্রথম কোনো দেশের সরকার প্রধান একসঙ্গে ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণ করছে। এর আগে কোনো মুসলিম শাসক বা সরকার প্রধান এক সঙ্গে এতগুলো মসজিদ নির্মাণ করেননি। এটি একটি অনন্য এবং যুগান্তকারী ঘটনা আমরা বলবো।
একসঙ্গে এতগুলো মসজিদ নির্মাণের যুগান্তকারী উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ধর্ম প্রতিমন্ত্রী দেশের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে উন্নত মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে নিজস্ব অর্থায়নে ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকা ব্যয়ে মডেল মসজিদ ও সংস্কৃতি কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করছে সরকার।
আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত সুবিশাল এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্সে নারী ও পুরুষদের পৃথক ওযু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরী, গবেষণা কেন্দ্র, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, পবিত্র কুরআন হেফজ বিভাগ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজ্জযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, অটিজম কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র, ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্র থাকবে। এছাড়া ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসন সহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা এবং গাড়ি পার্কিং সুবিধা রাখা হয়েছে।
মডেল মসজিদগুলোতে দ্বীনি দাওয়া কার্যক্রম ও ইসলামী সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি মাদক, সন্ত্রাস, যৌতুক, নারীর প্রতি সহিংসতা সহ বিভিন্ন সামাজিক ব্যাধি রোধে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. নজিবর রহমান জানান, মডেল মসজিদগুলো শুধু নামাজ পড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এখানে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি জ্ঞান অর্জন ও গবেষণা সুযোগ থাকবে, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।এটাই হচ্ছে বিশ্বে প্রথম কোনো সরকারের একই সময়ে একসঙ্গে এত বিপুলসংখ্যক মসজিদ নির্মাণের ঘটনা। যা বিশ্বে বিরল।