মো: সাকিব চৌধুরী-
ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার এক দফা দাবিতে বিভাগীয় শহর রংপুর থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত তারুণ্যের রোডমার্চ করছে জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, টাকা চুরির কারণে দেশে রিজার্ভ কমেছে। আর সেই টাকায় আয়েশ করছে আওয়ামী লীগ। নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মারছে দেশের মানুষকে। মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর নগরীর গ্রান্ড হোটেল মোড়ে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োজিত রোডমার্চে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন- আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে। দেশের মানুষ ভোট দিতে পারে না। এছাড়া দেশে বিদ্যুতের সমস্যা তো এখনো কাটছে না। ব্যাংক লুট করে বিদেশে টাকা পাচার করে দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। এ কারণেই রিজার্ভ কমে গেছে। যুবকদের চাকরি নেই। ব্যবসাও করতে পারছে না।
তিনি বলেন- গত ১৫ বছরে পরিকল্পিতভাবে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে এ সরকার। বেগম খালেদা জিয়াকে গৃহবন্দি করে রেখেছে। চিকিৎসকরা চিন্তিত তাকে নিয়ে। বেগম জিয়ার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। তারপরও তাকে বিদেশে যেতে দিচ্ছে না সরকার। মহাসচিব বলেন, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে পরপর ২টি নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। তাই বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না জনগণ। বর্তমান সরকার বারবার জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন-গতকাল (শুক্রবার) রাতে আমি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে গিয়েছিলাম। তিনি অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ সরকারের কাছে তার (খালেদা জিয়ার) পরিবার ও চিকিৎসকরা বিদেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য বারবার বলেছে। কিন্তু সরকার এসব কথা শুনছে না। অথচ বর্তমান স্বঘোষিত প্রধানমন্ত্রী যখন বন্দি ছিলেন, তখন তিনি কানের অসুখের কথা বলে যুক্তরাষ্ট্র গিয়েছিলেন। আর আজ তিনিই খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছেন না।
রংপুরের মানুষকে অভিনন্দন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন – বিখ্যাত নূরলদীন ব্রিটিশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করেছিলেন এই রংপুর থেকেই। আবার সেই রংপুর থেকেই তরুণরা আপনাদের ডাক দিয়েছে- এই ভয়াবহ, একনায়কতন্ত্র, স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ, লুটেরা সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন- রোডমার্চ শুরু হলো। যেদিন সরকারের পতন ঘটানো হবে সে দিন রোডমার্চ শেষ হবে। সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন- ক্ষমতায় গেলে আন্দোলনরত দলগুলো নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে।
সরকারের উদ্দেশে মহাসচিব বলেন- এক দফা মেনে নিন। না হলে জনগণ তৈরি হয়ে গেছে। জনগণের উত্তাল তরঙ্গে সরকার ভেসে যাবে।
বিএনপি মহাসচিব আরো বলেন-আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বিএনপি অংশ নেবে। অন্যথায় এ সরকারের পতন না ঘটিয়ে ঘরে ফিরে যাব না।
রোডমার্চে উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব মাহফুজ-উন-নবী ডন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
পরে জেলা বিএনপি কার্যালয় থেকে দলীয় নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণে রোডমার্চ নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে দিনাজপুরের দিকে রওনা হয়।