কৃমির সংক্রমণ স্বাভাবিক একটি বিষয়। কৃমি শুধু শিশুদের সমস্যা নয়, এ সমস্যা প্রাপ্ত বয়স্কদের মাঝেও রয়েছে। কৃমির সংক্রমণ এর লক্ষণ তেমন প্রকাশ পায়না বলে ডাক্তার রোগীকে কৃমির ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিলেও অনেকেই সেবন করতে চায় না। হালকা লক্ষণ দেখা দিলেও রোগী তা মানতে রাজি নয়। প্রাপ্ত বয়স্কদের চেয়ে শিশুদের কৃমি সংক্রমণের হার বেশি। শিশুদের বেশি সংক্রমণ করে সুতাকৃমি,বক্র কৃমি, গোল কৃমি, হুইপ ওয়ার্ম।
অনেক ক্ষেত্রেই কৃমি সংক্রমণের কোন লক্ষণ দেখা না দিলেও, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যেসব লক্ষণ দেখা যায়- শিশু দুর্বল হয়ে পড়ে ও অপুষ্টিতে ভোগা, শিশুর শরীরের ওজন কমা, পেটে হালকা ব্যথা অনুভব,বমির ভাব,খিটখিটে আচরণ,কাশি,মলদ্বারে চুলকানি,ঘুম কমে যায়,পায়খানার সাথে রক্ত দেখা দিতে পারে,খিচুনী,প্রস্রাবে ইনফেকশন, প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়া,প্রস্রাবের সময় ব্যথা অনুভব, রক্তশূন্যতা,রুচি না থাকা,বদহজম এমনকি ডায়ারিয়াও হয়ে থাকে।
কৃমির সংক্রমণ বেশি হলে এই লক্ষণ গুলো দেখা দিবে তবে কৃমির সংক্রমণ কম থাকলে এই সব লক্ষণ নাও থাকতে পারে।
শিশুর কৃমি হওয়ার কারণ:
শিশুকে পরিষ্কার -পরিচ্ছন্ন না রাখলে, ৬ মাস বয়সের আগে মায়ের বুকের দুধের বাইরে খাদ্য খাওয়ালে,শিশু খালি পায়ে থাকলে সে সময় পায়ের নখের ভিতরে কৃমির ডিম প্রবেশ করে অন্ত্রে পৌঁছায়,
শিশুকে খাওয়ানোর আগে হাত ভালো করে পরিষ্কার না করলে,নিয়মিত গোসল না করালে ও
শিশুর নখ নিয়মিত না কাটলে,দূষিত মাটি-পানির জন্য,শাক-সবজি মাছ-মাংস ভালো করে ধুয়ে না খেলে ও অর্ধ সিদ্ধ খাবার খেলে।
কৃমি সংক্রমণ রোধে করণীয়: নখ ছোট রাখা,বাসায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা,প্রতিদিন না হলেও দুই থেকে তিন দিন পর জীবানু নাশক দিয়ে বাসার ফ্লোর পরিষ্কার করা, খালি পায়ে না থাকা,
শিশুর ময়লা অবর্জনা পরিহার করে খেলাধুলা করা,
খাবার আগে এবং টয়লেট সেরে সাবান দিয়ে ভলো করে হাত ধোয়া,পানি ফুটিয়ে বা ফিল্টার করে ব্যবহার করা।
এক বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত শিশুকে কৃমির ঔষধ সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এক বছর বয়সের পর নিয়মিত ৬ মাস অন্তর শিশুকে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কৃমির ঔষধ অবশ্যই সেবন করাতে হবে। প্রথম ডোজ ঔষধ সেবনের পর সাত থেকে দশ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ ঔষধ দিতে হবে। কৃমির ঔষধ কৃমিকে মেরে ফেলে ঠিকই তবে কৃমির ডিম এবং লার্ভা মারতে পারে না। তাই ৬ মাস পর পর শিশুকে কৃমির ঔষধ অবশ্যই প্রয়োগ করতে হবে। কৃমি পরিবারের মধ্যে একজন থেকে অপর জনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে বলে পরিবারের সকলকে একসাথে কৃমির ঔষধ সেবন করতে হবে।