নিজস্ব প্রতিনিধি:
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের নতুন ও দ্বিতীয় পুলিশ কমিশনার হিসেবে ৩১জুলাই,রবিবার,সকালে যোগদান করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) জনাব নুরেআলম মিনা বিপিএম (বার), পিপিএম।
তিনি আরপিএমপি সদরদপ্তরে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার) জনাব মোঃ মেহেদুল করিম, পিপিএম-সেবা এর নিকট হতে পুলিশ কমিশনারের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি ডিসির মোড়ে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এ সময় রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ মেহেদুল করিম পিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনারবৃন্দ, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারবৃন্দ, সহকারী পুলিশ কমিশনারবৃন্দ সহ বিভিন্ন স্তরের পুলিশ সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশে যোগদানের আগে তিনি ঢাকা রেঞ্জ এ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ৩০ জুন ২০২২ খ্রি. মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন নিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ শাখা কর্তৃক জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হিসেবে পদায়ন করা হয়। গত ১১ মে ২০২২ খ্রি. জারিকৃত এক প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশ পুলিশের ৩২ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত ডিআইজি থেকে ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়। তাঁদের মধ্যে দক্ষ ও চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে সুবিদিত জনাব নুরেআলম মিনা অন্যতম।
জনাব নুরে আলম মিনা ১৯৭৬ সালে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানাধীন এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে বিএসএস (সম্মান), এমএসএস সম্পন্ন করে ২০তম বিসিএসের মাধ্যমে ২০০১ সালে বাংলাদেশ পুলিশে সহকারী পুলিশ সুপার পদে যোগদান করেন। তিনি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী, সারদা, রাজশাহী থেকে বাস্তব প্রশিক্ষণ শেষে ২০০২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন – বিলাইছড়ি, রাঙ্গামাটি ও মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া সার্কেলে দক্ষতা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৬ সালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিক্রমে রেলওয়ে জেলা চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনসহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার – নোয়াখালী জেলা, ডিএমপি – ঢাকার এডিসি (রমনা বিভাগ), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার – কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলায় অত্যন্ত সুনাম ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন।
২০১২ পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিক্রমে সুনামগঞ্জ জেলায় পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করে ২০১৩ সালের ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ও একই সালের ২৮ এপ্রিল থেকে ২০১৬ সালের ১৯ জুলাই পর্যন্ত সিলেট জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে এবং ২০১৬ সালের ২০ জুলাই হতে ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এরপর তিনি পদোন্নতিক্রমে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) হিসেবে ঢাকা রেঞ্জে যোগদান করেন।
চাকুরী জীবনে জনাব নুরে আলম মিনা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর দারফুর, সুদান মিশনে লজিস্টিক অফিসার হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা পদক – ২০০৮ এ ভূষিত হন।
তিনি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী সারদায় প্রশিক্ষণ গ্রহণকালে দক্ষতা ও কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে আইজিপি’স মেডেল ফর বেস্ট ইন একাডেমিকস্ ২০০২ – এ ভুষিত হন। পুলিশ সুপার, সুনামগঞ্জ হিসেবে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে দক্ষতা ও সেবার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে ‘প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল (পিপিএম) – সেবা’ পদকে ভুষিত হন। ২০১৪ সালে ‘আইজিপি’স এক্সেমপ্ল্যারি গুড সার্ভিসেস ব্যাজ’ এ ভুষিত হন। চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে জীবনবাজি রেখে জঙ্গি দমনে অসম সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৮ সালে বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ সম্মাননা পদক ‘বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) – সাহসিকতা’ এবং দক্ষতার সাথে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, ২০১৮ সালের মহান জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সেবামূলক কাজে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৯ সালে ‘বাংলাদেশ পুলিশ মেডেল (বিপিএম) – সেবা’ পদকে ভূষিত হন। ২০২০ সালে কোভিড -১৯ প্রতিরোধে বিশেষভাবে দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘আইজিপি’স এক্সেমপ্ল্যারি গুড সার্ভিসেস ব্যাজ’ প্রাপ্ত হন।
চাকুরী জীবনে তিনি বাস্তব প্রশিক্ষণ ছাড়াও দেশে বিদেশে বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে অবস্থিত রয়্যাল পুলিশ কলেজ হতে ‘বেসিক কমার্শিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন কোর্সে’ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে আপোষহীন চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা জনাব নুরেআলম মিনা বিপিএম (বার), পিপিএম বিভিন্ন জেলায় মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গী দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। জনবান্ধব সেবামুখী পুলিশিং নিশ্চিতকরণে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রমকে জোরদার করার পাশাপাশি ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় আর্তমানবতার সেবায় উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। প্রবাসে কর্মরত চট্টগ্রাম জেলার বাসিন্দাদের পুলিশি সহায়তার জন্য তাঁর চালু করা ‘প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক’ সর্বমহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস এ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক প্রকাশিত সাময়িকী ‘ডিটেকটিভ’ এ তাঁর লেখা একাধিক প্রবন্ধ ও নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং ০২ কন্যা ও ০২ পুত্র সন্তানের জনক।