স্টাফ রিপোর্টার-
রংপুরে নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন কর্মকর্তা
-কর্মচারীবৃন্দ। তাদের অভিযোগ, বিভিন্ন রকম টালবাহানায় দীর্ঘ ২৬ মাস ধরে তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ রেখেছে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকগণ। বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
বুধবার (২৪আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে নগরীর মেডিকেল বুড়িরহাট রোডে নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে মেইন গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে হাসপাতাল পরিচালকদের অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে এই সেবা প্রতিষ্ঠানটি এখন অচল অবস্থা বিরাজ করছে বলে অভিযোগ করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
কর্মচারী-কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমানে আমাদের সব স্টাফদের বকেয়া বেতন পাঁচ কোটি টাকার উপরে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘ ২৬ মাস ধরে আমরা বেতন-ভাতা পাচ্ছি না। পরিচালকগণ এখন আর হাসপাতালে আসেন না। আমরা আর্থিক অনটনে দিনানিপাত করছি। কলেজ ও হাসপাতাল মিলে প্রায় পৌনে ৩শ জন স্টাফ ছিল। দীর্ঘ দিন ধরে বেতন না দিয়ে পরিচালকরা বিনা কারণে অনেক ছাটাই করেছে। অনেকেই আবার স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়েও দিয়েছেন। এখন প্রায় দেড়শ জন স্টাফ রয়েছে।
এখন কলেজে শিক্ষার্থী নেই। সবাই মাইগ্রেশন করে অন্যত্র চলে গেছে। হাসপাতালের কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। এভাবে যদি মাসের পর মাস আমরা বেতন না পাই, তাহলে আমরা স্ত্রী-সন্তান, সংসার চালাবো কি করে? সরকারকে বলছি আমাদেরকে বাঁচান, আমাদের দিকে একটু নজর দিন। এ ব্যাপারে আমরা রংপুর সিটি মেয়র, জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনার রংপুর মেট্রো, সিভিল সার্জন, পুলিশ সুপার বরাবর আবেদনের মাধ্যমে অবহিত করেছি।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, সহকারি প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্বাস আলী, তৈয়বুল ইসলাম, ওটি ইনচার্জ আঞ্জুয়ারা বেগম, ওয়ার্ড মাস্টার ইনচার্জ হাবিবুর রহমান মিলন প্রমুখ। প্রতিবাদ শেষে সকলের উপস্থিতিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বেগম রোকেয়া লাভলী বলেন, আমি কি জমিজমা বিক্রি করে কর্মচারীদের বেতন দিবো? হাসপাতাল বন্ধ রয়েছে, এখন শিক্ষার্থীদের ভর্তিও বন্ধ। কোথায় থেকে তাদের টাকা দিবো। কর্মচারীরা বেশি বাড়াবাড়ি করছে। আন্দোলনকারীদের অনেককেই আমরা এক বছর আগে ছাটাই করেছি। কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে আমাদেরকে জিম্মি করার চেষ্টা করছে।
অন্যদিকে হাসপাতালের পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনের ঝামেলা নিয়ে আমার কিছু জানা নেই। আমি তো নিজেও পাঁচ-ছয় মাসের বেতন পাবো। এখন এটা হাসপাতালের মালিকপক্ষ দেখবেন।