মো: সাকিব চৌধুরী
গাছে গাছে ঝুলছে পাকা টমেটো। টমেটোর ভারে নুয়ে পড়েছে গাছ। কিন্তু সেই টমেটো তুলতে আগ্রহ নেই কারো। ফলে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে বিপুল পরিমাণ টমেটো। শুধু টমেটোই নয়, অন্য সবজিরও চাহিদানুপাতিক দাম না পাওয়ায় ক্ষেতের মধ্যেই পচন ধরেছে। এমন চিত্র দেখা গেল রংপুর এর নব্দীগঞ্জ এলাকায়।
স্থানীয়রা বলছেন, গরমের কারণে জমিতে পচে যাচ্ছে টমেটো। এ ছাড়া দরপতনের কারণেও টমেটো তুলতে আগ্রহ হারিয়েছেন তারা। এক মণ টমেটো বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায়, তার চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে বাজারজাত করতে। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।
কৃষকদের দাবি, রংপুর নব্দীগঞ্জ উপজেলা এলাকার মধ্যে সব মাসেই বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে। উৎপাদিত সবজি সরবরাহ হয় শহরের বিভিন্ন জায়গায়। দেশের সবজি চাহিদা মেটাতে অবদান রাখছেন নব্দীগঞ্জ উপজেলা এলাকার কৃষকেরা। কৃষিখাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা বা সংরক্ষণাগার থাকলে এ ক্ষতি এড়ানো যেত।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ শুধু সবজি ক্ষেত। যেখানে টমেটো, বরবটি, করলা, লাউ, ঢ্যাঁড়শ ইত্যাদি। জমিতে ফলন ভালো হলেও দাম না পেয়ে হতাশা চাষিরা। প্রতি বছর নব্দীগঞ্জ উপজেলার মধ্যে মুন্সী ট্রারি, কাজী ট্রারি, স্বচাণ, ফরি কল্যাণী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সবজি চাষ হয়।
ফরি কল্যাণী ইউনিয়নের কৃষক আফজাল বলেন, আমি প্রায় ১৫ শতক টমেটো চাষ করেছি। ধার-দেনা করে চাষ করতে প্রায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। কিন্তু বিক্রি করে যে টাকা পাচ্ছি, তার চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে বাজারজাত করতে। প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮-১০ টাকা করে।
শিমুল বলেন, ত্রিশ শতকের মতো টমেটো চাষ করেছি। তাতে প্রায় খরচ হয়েছে দেড় থেকে আড়াই লাখ টাকা। ২ মণ টমেটো বাজারে নিয়ে গেলে বিক্রি হয় ৭৫০-১০০০ টাকা। বাজারজাত করতে খরচ হয় তার চেয়ে বেশি। এ ছাড়া অন্য সবজির দামও অনেক কম।
কৃষক আমিনুর বলেন, প্রথমদিকে কিছুটা দাম পেলেও মাঝখানে টমেটোর দাম কমে গেছে। কৃষকেরা এখন আর ক্ষেত থেকে টমেটো তুলছেন না। টমেটো তুলতে যে খরচ হয়, বিক্রি করতে হয় তার অর্ধেক দামে। ফলে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে।