বেশির ভাগ মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ক্ষতিকর নয়, বরং কার্যকারিতা কমে যায়। অর্থাৎ, ওষুধটি হয়তো কাজ করবে না, কিন্তু বিষক্রিয়া ঘটাবে না।
তরল ওষুধ, ইনসুলিন, নাইট্রোগ্লিসারিন, ইনহেলার, অ্যান্টিবায়োটিক সাসপেনশন, থাইরয়েড ওষুধ ইত্যাদি মেয়াদোত্তীর্ণ হলে কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে বিপদজনক হতে পারে। কিছু ওষুধে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় বিষাক্ত যৌগ তৈরি হতে পারে, তবে এমন ঘটনা বিরল।
প্রেসক্রিপশনবিহীন সর্দি-জ্বর, ব্যথার ওষুধ বা ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট সাধারণত মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও সীমিত সময়ের জন্য নিরাপদ হতে পারে।
কিন্তু প্রেসক্রাইব করা ওষুধ (যেমনঅ্যান্টিবায়োটিক, ইনসুলিন, ব্লাড থিনার) নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ ব্যবহার করা একদম উচিত নয়।
বাংলাদেশের আইনে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ ও বিক্রি বেআইনি। যদিও কার্যকরভাবে এটি সবসময় বাস্তবায়ন হয় না।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ওষুধ সংস্থা ফেডারেল ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও আর্মি মেডিকেল বিভাগ ১৫ বছর মেয়াদোত্তীর্ণ ১০০টি ওষুধ পরীক্ষা করে দেখেছে, ৯০ শতাংশ ওষুধ তখনও কার্যকর ছিল।
মার্কিন চিকিৎসা সংস্থা আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশনের মতে, অধিকাংশ ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণের পরও কয়েক বছর কার্যকর থাকে। তারা ২০০১ সালে একটি গবেষণা পরিচালনা করে। ২২টি ভিন্ন ওষুধের ৩০০০ ব্যাচ নেওয়া হয়। সেগুলো পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, বেশিরভাগ ওষুধের কাজ করার ক্ষমতা তাদের ওপর মুদ্রিত মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখের চেয়ে অনেক বেশি। ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে এএমএ প্রায় ৮৮ শতাংশ ওষুধের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও প্রায় ৬৬ মাস বাড়িয়ে দেয়।
বিপরীতে, সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম বলছেন, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ গুণগতমান হারিয়ে ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে, এমনকি মৃত্যুঝুঁকি তৈরি করে। অপ্রয়োজনীয় ভয় নয়, সচেতনতা জরুরি।
মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খাওয়ার আগে চিকিৎসক বা ফার্মাসিস্টের পরামর্শ নিন। অ্যান্টিবায়োটিক, ইনসুলিন, হার্টের ওষুধ, তরল ওষুধ, ইনজেকশন, ইনহেলার মেয়াদ শেষ হলেই বাদ দিন।
ওষুধ ঠান্ডা, শুষ্ক ও অন্ধকার স্থানে সংরক্ষণ করুন।
। (স্বাস্থ্য ডেস্ক)