মোঃ সাকিব চৌধুরী
নীলফামারী জেলার ডিমলা থানাধীন পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের বাংলাপাড়া গ্রামে পারিবারিক জমির সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে আপন মামার হাতে তার ভাগ্নে খুন হয়। ঘটনাটি স্থানীয় ও জাতীয় সংবাদ মাধ্যম সমূহে প্রচারিত হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এলাকাবাসীর মাধ্যমে জানা যায় যে, বেশ কিছুদিন ধরে জমির সীমানা নিয়ে শের আলীর সঙ্গে তার ভগ্নিপতি মনোয়ার ও ভাগ্নে মাসুমের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। এমন বিরোধের অভিযোগের ভিত্তিতে ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে চলতি মাসের ২০ তারিখ বুধবার সকালে উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়।
সালিশ শেষে উভয় পক্ষ ইউনিয়ন পরিষদ হতে আনুমানিক দুপুর আড়াইটার দিকে বাড়ি ফেরার পথে ফেডারেশন বাজার এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে পুনরায় কথা কাটাকাটির শুরু হয়। এরই এক পর্যায়ে মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী মোঃ ফকির উদ্দিন ও অন্যান্য আসামীরা ভিকটিম খালেদ মাসুম (১৮)’কে ঘেরাও করে এলোপাথারী কিল ঘুষি এবং কাঠের লাঠি দিয়ে ভিকটিম এর মাথার পিছনে ঘাড়ের উপর বাম পাশে সজোরে উপর্যুপরি আঘাত করে। এতে খালেদ মাসুম মাটিতে পড়ে জ্ঞান হারায়। স্থানীয়দের সহায়তায় মাসুমকে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আজ সোমবার বেলা ১১টায় র্যাব-১৩ ব্যাটালিয়ন সদর ক্যাম্পে রংপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন র্যাব-১৩ রংপুর এর উপ-অধিনায়ক মেজর মইদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে গত ২০ জুলাই একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২৭, তারিখ- ২০/০৭/২০২২, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড। ঘটনার পর পরই অভিযুক্ত আসামীরা পালিয়ে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে।
এরই প্রেক্ষিতে র্যাব-১৩ ব্যাটালিয়ন সদর, রংপুর একটি চৌকস আভিযানিক দল এ ঘটনার বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ২৪ জুলাই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া থানা এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব-১৩’র একটি চৌকস আভিযানিক দল।
এ সময় এজাহারে বর্নিত চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার প্রধান আসামী নীলফামারী জেলার ডিমলা থানার অন্তর্ভুক্ত বাংলাপাড়া গ্রামের মৃত জিয়ারত আলীর ছেলে (মামা) মোঃ শের আলী @ হানিফ (২২), জলঢাকা থানার অন্তর্ভুক্ত (পালিত পিতা) মোঃ মজিবুর রহমান @ পাপলা এর ছেলে ০২নং আসামী মোঃ ফকির উদ্দিন (২৭), একই জেলার ডিমলা থানাধীন বাংলাপাড়া গ্রামের মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরীর স্ত্রী ০৪নং আসামী মোছাঃ সুরিতা বেগম (৪৮) এবং জলঢাকা থানার অন্তর্ভুক্ত মোঃ ফকর উদ্দিনের স্ত্রী ০৫নং আসামী মোছাঃ মালেকা বেগম (২২)কে গ্রেফতার করে।
মেজর মইদুল ইসলাম আরও জানান, র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ০১নং আসামী মোঃ শের আলী @ হানিফ (২২) স্বীকার করে যে, ইউনিয়ন পরিষদে অনুষ্ঠিত সালিশ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সে সহ তার সহযোগীদের সহাতায় ভিকটিম খালেদ মাসুম (১৮)’কে ঘেরাও করে এলোপাথারী কিল ঘুষি এবং কাঠের লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাতের মাধ্যমে হত্যা করে। ধৃত আসামীদেরকে থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান।