ডেস্ক নিউজ –
হিমশৈলে ধাক্কা মেরে উত্তর অতলান্তিকে ডুবে যায় সে সময়ের অন্যতম বিলাসবহুল যাত্রিবাহী জাহাজ টাইটানিক। সময়টা ছিল ১৪ এপ্রিল,১৯১২। ১১১ বছর আগের কাহিনী। ১৫০০-রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
আরএমএস টাইটানিক প্রথম যাত্রাতেই ডুবে গিয়েছিল । জাহাজটি সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্কের পথে পাড়ি দিয়েছিল। জাহাজের নির্মাতা সংস্থার তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, এই জাহাজ ডুবে যাওয়া ‘অসম্ভব’। কিন্তু তার পরেও জাহাজটি হিমশৈলে ধাক্কা মেরে ডুবে যায় । ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে সমুদ্রের তলায় রয়েছে টাইটানিক।
অতলান্তিক মহাসাগরের প্রায় সাড়ে ১২ হাজার ফুট নীচে থাকা টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ এখন অজানা এবং ‘ভয়ঙ্কর’ প্রাণীদের বাসস্থান।
সমুদ্রের ১০ হাজার ফুট নীচে এক অচেনা পৃথিবী রয়েছে। যেখানে দিনরাত্রি,ঋতু পরিবর্তন,আবহাওয়া
পরিবর্তনের প্রায় কোনও প্রভাব নেই। সূর্যের
আলোও পৌঁছয় না সেখানে। অদ্ভুত সব রহস্য-
জনক প্রাণী এবং উদ্ভিদের সেখানেই নাকি বাস। কাদা-পলির মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক কীটও দেখতে পাওয়া যায়।সমুদ্রের অন্ধকারে থাকা এই প্রাণীদের বেশির ভাগেরই দেহ শক্ত আবরণে ঢাকা। অনেক প্রাণীর শরীরে আবার কোনও হাড় থাকে না।
টাইটানিকের ধ্বাংসাবশেষের কাছে দেখতে পাওয়া যায় ‘অ্যাবিসোব্রোটুলা গ্যালাথি’। যা আদপে এক রাক্ষুসে মাছ। যা মূলত কৃমি এবং অন্যান্য কীট খেয়ে বেঁচে থাকে। অর্ধস্বচ্ছ ত্বকে আচ্ছাদিত এই মাছের চোখ এতই ছোট যে তা দেখতে পাওয়া যায়
না। সমুদ্রের অতলে শিকারের জন্য তাদের মাথায় বেশ কয়েকটি সংবেদনশীল ছিদ্র দেখতে পাওয়া যায়।
টাইটানিকের আশেপাশে গেলে দেখা মিলতে পারে দানব মাকড়সারও। বিশালকায় সে সব সামুদ্রিক মাকড়সা সমুদ্রের সাত থেকে ১৩ হাজার ফুট গভীরে বাস করে। সমুদ্রের তলদেশে হামাগুড়ি দিয়ে বা সাঁতার কেটে ঘুরে বেড়ায় এই মাকড়সাগুলি। এগুলির এক একটির দৈর্ঘ্য আধা মিটার পর্যন্ত হতে পারে।
টাইটানিককে বাড়ি বানিয়েছে যে ‘ভয়ঙ্কর’ একটি ব্যাকটেরিয়া। এই ব্যাকটেরিয়ার নাম ‘হ্যালোমোনাস টাইটানিকা’। ২০১০ সালে এই ব্যাকটেরিয়ার বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আসে। টাইটানিকের মরচে পড়া লোহা এই ব্যাকটেরিয়ার মূল খাদ্য। এই মরচে পড়া লোহা খেয়েই বেঁচে থাকে ‘হ্যালোমোনাস টাইটানিকা’। তাই এর নামও দেওয়া হয়েছে টাইটানিকের নামেই।
বিজ্ঞানীদের উদ্বেগ- যে হারে এই ব্যাকটেরিয়া টাইটানিকের লোহা খেয়ে সাফ করে দিচ্ছে, তার জন্য টাইটানিক সমুদ্রের বুক থেকে চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে।