মোঃ সাকিব চৌধুরী,
রংপুর অঞ্চলের চার জেলার করোনা পরীক্ষার একমাত্র পিসিআর মেশিনটি দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। দীর্ঘদিন ধরে মেশিনটি বিকল অবস্থায় থাকলেও তা সংস্কারে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এতে এ অঞ্চলের মানুষ করোনা পরীক্ষা করাতে দুর্ভোগে পড়েছেন। সিভিল সার্জন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিষয়টির জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। অন্যদিকে করোনা ইউনিটের প্রধান এবং রংপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. বিমল চন্দ্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়ে নিজের দায় সেরেছেন। তবে এখনও মেশিনটি সচল হয়নি।
এদিকে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর বলছে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ে রংপুরে রোগী বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ জন।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, করোনা রোগীদের শনাক্ত করার জন্য দেড় বছর আগে রংপুর বিভাগের আট জেলার জন্য দুটি পিসিআর মেশিন বরাদ্দ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। এর মধ্যে রংপুর মেডিক্যাল কলেজে একটি এবং দিনাজপুরের আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজে অপর মেশিনটি স্থাপন করা হয়। রংপুর মেডিক্যালের পিসিআর মেশিন রংপুর সিটি করপোরেশন ও পুরো জেলা ছাড়াও গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার রোগীদের করোনা পরীক্ষা হতো। ওই পিসিআর মেশিনে প্রতিদিন ১৮০ জনের করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব। বিগত ৬/৭ মাস ধরে করোনার প্রকোপ কমে এলেও পরীক্ষা চলছিল। কিন্তু সাড়ে তিন মাস আগে পিসিআর মেশিনটি বিকল হয়ে যায়। অনেক চেষ্টা করেও তা সচল করা যায়নি।
মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রেবায়োলজি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পিসিআর মেশিন বিকলের বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদফতরকে জানানো হলে দু’জন বিশেষজ্ঞ পিসিআর মেশিনটি সচল করার চেষ্টা করেন ও ব্যর্থ হন। এরপর পিসিআর মেশিনটি আর সচল করার কোনও উদ্যোগ দেখা যায়নি। পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. বিমল চন্দ্র স্বাস্থ্য অধিদফতরে চিঠি দিয়ে জানায়। তবুও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শামিম আহাম্মেদ বলেন, পিসিআর মেশিনটি দেখভাল করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ঢাকায় চিঠি দিয়েছেন বলে শুনেছি। সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কিনা তারাই বলতে পারবেন।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রংপুরে করোনা পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। তবে আমরা র্যাপিড টেস্ট চালু রেখেছি।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ডা. জাকেরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও পিসিআর মেশিন বিকল হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন আপাতত জরুরি কিছু পরীক্ষা দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ ও রংপুর সিএইমএইচে করানো হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।