রংপুর মহানগর প্রতিনিধি-
১৭ অক্টোবর,২০২২ রংপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ইলিয়াস আহমেদ আনারস প্রতীক নিয়ে লড়বেন এবং তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোছাদ্দেক হোসেন বাবলু মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়বেন। তাঁরা দু’জনেই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ ডিসি অফিসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাওয়ের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালের স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা ছিলেন। বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও যুগ্ম আহবায়ক ছিলেন। তিনি ১২ বছর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের জেলার কমান্ডার ছিলেন। এ ছাড়া তিনি রংপুর চেম্বার অব কর্মাস এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক ছিলেন।
নির্বাচন কমিশনের দাখিল করা হলফনামায় থেকে জানা যায়,
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদের নগদ টাকা ৩০ হাজার ও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসাদ্দেক হোসেন বাবলুর নগদ টাকা ১৮ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার ৫২৪। যথাক্রমে ইলিয়াস আহমেদের বার্ষিক আয় ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা আর তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বাবলুর বার্ষিক আয় ২৪ লাখ ২৯ হাজার ১০১ টাকা। শিক্ষাগত যোগ্যতায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী এলএলবি আর স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএসসি পাস।
নির্বাচনী হলফনামায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইলিয়াস আহমেদ উল্লেখ করেন তিনি এলএলবি পাস করেছেন। পেশায় আইনজীবী। কৃষি খাতে আয় দেখানো হয়েছে ১ লাখ টাকা, পেশা থেকে আয় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থ ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা, স্ত্রীর নামে পোস্টাল সেভিংস রয়েছে ৫ লাখ টাকা, স্বর্ণ ও মূল্যবান ধাতু রয়েছে ৬ ভরি, নিজের নামে ১০ বিঘা ও স্ত্রীর নামে ২০ বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। এ ছাড়া অকৃষি জমি ৩০ শতক, গ্রামে দোতলা বাড়ি এবং স্ত্রীর নামে টিন সেড বাড়ি রয়েছে। তার মুক্তিযোদ্ধা ঋণ রয়েছে ১০ লাখ টাকা।
হলফনামা অনুয়ায়ী মোছাদ্দেক হোসেন বাবলুর আত্মীয় স্বজনদের থেকে ধার অথবা কর্জ নেই। পেশায় ব্যবসায়ী। কৃষিখাতে তার রয়েছে ২৭ হাজার ২৯০ টাকার সম্পত্তি। বাড়ি, এপার্টমেন্ট, দোকানসহ অন্য ভাড়া বাবদ আয় রয়েছে ৯ লাখ ৮৭ হাজার ৭৬০ টাকা। ব্যবসা বাবদ আয় রয়েছে ১৪ লাখ ১৪ হাজার ৫১ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, একচেঞ্জ ইত্যাদিতে রয়েছে ১ কোটি ৫৩ লাখ ৪৩ হাজার টাকা।
বাস, ট্রাক, ছোট গাড়ি ইত্যদি বাবদ দেখানো হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। স্বর্ণ অন্য মূল্যবান পাথর রয়েছে ৫৫ হাজার টাকার। ইলেক্টনিক্স সামগ্রী রয়েছে ১ লাখ টাকার। আসবাবপত্র ১৫ হাজার টাকা। কৃষি জমি রয়েছে ৫৮ লাখ ৩ হাজার ২৫০ টাকার। এ ছাড়া অকৃষি জমি রয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭০ টাকার। দালান, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন রয়েছে ১৫ কোটি ৮০ লাখ ২৩ হাজার ৪৯৬ টাকার। বাড়ি এপার্টমেন্ট ১ কোটি ৫৫ লাখ, ৪০ হাজার ৪৫০ টাকার। অন্য ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৫৬ টাকা। অপরদিকে তার জামানত বিহীন ঋণ ৫০ লাখ এবং ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ১৯ কোটি ২৩ লাখ ৫১ হাজার ১৯৩ টাকা।
দুই বীর মুক্তিযোদ্ধার এই লড়াই নিয়ে রংপুরের জনগণের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে। তাদের চাওয়া-
ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত রংপুর জেলার বাসিন্দাদের আশা- আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলক হিসেবে উন্মোচিত হবে রংপুর জেলা পরিষদ এর দ্বার।