20.9 C
Rangpur City
Sunday, December 22, 2024
Google search engine
Homeসাস্থ্য ও চিকিৎসাডেঙ্গুতে কারা এবং কেন বেশি ঝুঁকিতে,করণীয় কী?

ডেঙ্গুতে কারা এবং কেন বেশি ঝুঁকিতে,করণীয় কী?

স্বাস্থ্য ডেস্ক –

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য- ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯২ হাজার ২৪ জন
চলতি বছর ০১ জানুয়ারি থেকে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত। দেশে যেখানে নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যা বেশি; নারী ৩৪ হাজার ৪১৮ জন এবং পুরুষ ৫৭ হাজার ৬০৬ জন। আবার এর মধ্যে ৫১ শতাংশ রোগীই ১৬ থেকে ৩৫ বছর বয়সী। এখন পর্যন্ত, চলতি বছর ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৪৩৫ জন। এর মধ্যে নারী ২৪৭ ও পুরুষ ১৮৮ জন। ঝুঁকিতে আছে নির্দিষ্ট বয়সী শিশু ও নারীরা।

সাধারণত জুলাই-অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ থাকে। কারণ এ সময়টিতে এডিস মশার বিস্তার ঘটে। মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রকোপে এ বছর আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে ।

ডেঙ্গুতে কারা এবং কেন বেশি ঝুঁকিতে আছেন এবং তাদের জন্য করণীয় কী? এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানান ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড অ্যান্ড মাদার হেলথ (আইসিএমএইচ)-এর সহকারী অধ্যাপক  আহমেদ নাজমুল আনাম।

নারীরা ডেঙ্গুতে বেশি আক্রান্ত হন, কারণ তারা দেরিতে চিকিৎসা নিতে যান। এ ছাড়া বাংলাদেশের নারীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা পুষ্টিহীনতাও রয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতদের মধ্যে বেশির ভাগই শক সিনড্রোমে মারা যাচ্ছেন। সঠিক সময়ে হাসপাতালে না যাওয়ার কারণেই শক সিনড্রোম হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

মেডিকেলের পরিভাষায়, ‘শক সিনড্রোম’ হলে রোগীকে হাসপাতালে যখন নেওয়া হয় তখন তাদের বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে। দুই-তিন দিনের মধ্যেই তারা মারা যান। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গর্ভাবস্থায় ডেঙ্গু আক্রান্ত নারী ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি।

গর্ভকালীন দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দুর্বল থাকার কারণে ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর এবং ডেঙ্গু শক সিনড্রোমে মায়ের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কাও বেশি।

অন্তঃসত্ত্বা ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে গর্ভস্থ সন্তানের জীবনে মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে। গর্ভকালীন বমি ও অত্যধিক জ্বরের কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয় এবং রক্তচাপ কমে যায়। ফলে গর্ভপাত হতে পারে। গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় বা তৃতীয় মাসে শরীর থেকে গর্ভস্থ বাচ্চার শরীরে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়, ফলে বাচ্চার শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দেয়। এতে গর্ভে বাচ্চার মৃত্যু হতে পারে, অসময়ে অপরিপক্ব সন্তান প্রসব হতে পারে।

ডেঙ্গু ভাইরাস গর্ভস্থ সন্তানের শরীরে সংক্রমিত হতে পারে, যা অনাগত সন্তানের জন্মগত ত্রুটি, বিশেষত মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রে গঠনগত ত্রুটি হতে পারে। যাতে পরবর্তীকালে সন্তানের স্নায়ু বিকাশজনিত জটিলতা তৈরি হতে পারে। তাই ডেঙ্গু রোগের উপসর্গ দেখা দিলেই গর্ভবতী মাকে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ১৬ থেকে ৩৫ বছর বয়সীরাই কেন বেশি? এ প্রসঙ্গে আহমেদ নাজমুল আনাম বলেন, ‘এ বয়সটায় অনেকে মনে করেন ডেঙ্গু তাকে আক্রান্ত করতে পারবে না। ফলে জ্বর হলেও সেভাবে গুরুত্ব দেন না। এ বয়সী যারা হাসপাতালে আসছেন, দেখা যায় তাদের আগে একবার ডেঙ্গু হয়ে গেছে কিন্তু জানতে পারেননি। কিন্তু দ্বিতীয়বার যখন ডেঙ্গু জ্বর হয় তখন খুব জোরালোভাবে হয়। যার কারণে জটিল পরিস্থিতিতে পড়ার আশঙ্কা বেশি। তাই অবহেলার কোনো সুযোগ নেই।’

ডেঙ্গুতে এবার এক থেকে দশ বছর বয়সী শিশুদের আক্রান্তের হার বেশি। এক বছরের কম বয়সী শিশুরা আছে সবচেয়ে ঝুঁকিতে। কারণ হিসেবে চিকিৎসক আহমেদ নাজমুল আনাম বলেন, ‘এ বয়সী শিশুর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম। তার ওপর বেশির ভাগ রোগী ডাক্তারের কাছে আসছে জ্বর বা ডায়রিয়া হওয়ার চার-পাঁচ দিন পর। এতে রোগী অবস্থা গুরুতর পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। দেখা যায়, কারও ফুসফুসে বা পেটে পানি চলে এসেছে বা রক্তক্ষরণ হচ্ছে।

অনেকের ক্ষেত্রে হাসপাতালে আসার পরপরই আইসিইউ সাপোর্ট লাগছে। এসব রোগীর চিকিৎসায় সুস্থ হতে ১০ থেকে ১৫ দিন লেগে যায়।’

ডেঙ্গু থেকে সুরক্ষার ব্যাপারে  আহমেদ নাজমুল আনাম বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের আন্তরিক যত্ন, সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ এবং সচেতনতার মাধ্যমেই নারী-নির্দিষ্ট বয়সী-অন্তঃসত্ত্বার ডেঙ্গু রোগ মোকাবিলা করা সম্ভব।’

News
Newshttps://sotterkontho24.com/
রোড নংঃ ৫/১, বাসা নংঃ ৩৮৮, হোল্ডিং নংঃ ৪৪৫ স্টেশন রোড, আলমনগর, পীরপুর, রংপুর। মোবাইলঃ ০১৭৩৬৫৮৫৭৭৭
RELATED ARTICLES
- Advertisment -
Google search engine

জনপ্রিয় নিউজ

সাম্প্রতিক মন্তব্য