তুহিন চৌধুরী:
(রাজনৈতিক,সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠক)
তেলের দাম সমন্বয় করার কারণে জীবনযাপন এর উপর প্রভাব ফেলবে এটি ঠিক,তেমনি রপ্তানীযোগ্য পণ্য উৎপাদনে খরচ বাড়বে।
তেমনি পণ্য মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রেতা যদি মূল্য না বাড়ায় তাতে উৎপাদন এবং রপ্তানী ঝুঁকিতে পড়তে পারে। আবার বিদুৎ এর ঘাটতির কারণে তেল দিয়ে জেনারেটর চালানো এবং সব ক্ষেত্রে আবার জেনারেটর কাজে আসে না। এর কারণে কয়েক দফা খরচ বেড়ে পন্যের উপর পড়ে।
এদিকে পরিবহন খাতে নৈরাজ্য দেখা যাচ্ছে।পরিবহন খাতে বাস শুধু নয়,ট্রাকের ভাড়াও কিলো প্রতি নির্ধারণ করতে হবে।তা না হলে এই নৈরাজ্য থামবে না। কেননা রপ্তানীকারকগণ ক্রেতাদের কাছে ধর্ণা দিয়েও মূল্য বাড়াতে পারছে না বা বাড়াচ্ছে না।
এছাড়া আবার অধিকাংশ ক্রেতাদের চাপ রয়েছে কম্প্লায়েন্স সহ নানা শর্ত সহ অনেক ধরনের শর্ত।এ সুযোগে মাথা চাড়া দিতে পারে অশুভ শক্তি। রয়েছে আন্তর্জাতিক দেশি চক্র।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন অনেকের কাছে ঈর্ষণীয় কেননা দেশকে তিনি যে জায়গায় নিয়ে গেছেন,তা শত্রুরা প্রকাশ্যে না বললেও গোপনে স্বীকার করে। এ দেশের জীবন যাত্রা করোনার কারণে থমকে যায়নি। করোনাকে মোকাবেলা করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে বিশ্বকে।করোনার থাবা না থামতেই শুরু হয়েছে আরেক দুর্যোগ, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বকে তার গতিপথে আটকে দিলো। জীবন যেন আর চলতে চাইছে না।
বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা আর সংকটের মাঝে আটকা পড়ে গেছি আমরা। নানাজন নানা কথা বলছি। নানাজন নানা সমালোচনায় মুখরিত আর এই সুযোগে সরকার বিরোধীরা মাঠে অনেকদিন পর যেন ওয়ার্মআপে।
আন্দোলন বা দাবী আদায় নাকি গণতান্ত্রিক অধিকার। এ দেশ ৯৩ দিনের আগুন সন্ত্রাস দেখার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে, এই সরকার বিরোধীদের কাছে অনেক আগে। সরকার জনগণের সহায়তায় তা রোধ করে দেশকে অনেক দূর এগিয়ে এনেছে
আমাদের দেশের বর্তমান প্রজন্ম এখন রাজনীতি বিমুখ। কেননা তাদের ভাষায় রাজনীতি নয় এ যেন নোংরামির এক ময়দান। নীতি আদর্শ সব কিছুতেই একপ্রকার শিষ্টাচার বহির্ভূত।যাই হোক রাজনীতি যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার।কিন্তু ইতিহাস কী বলে?
এ দেশ ৪৮,৫২,৬৬,৬৯,৭০,৭১,৭৫,৮৬,৯০,৯১, ২০০১, সহ তার পরবর্তী ১/১১ সহ যে দিন ইতিহাস দেখেছে,দেখেছে কালোরাত্রী,সহ অনেক ঘটনা সহ নির্মম ঘটনা।
এ দেশ কোথায় ছিলো ? আর এখন কোথায় দাড়িয়ে? জনগণের কষ্ট বা সমস্যা এ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র চাইতে আর কে বেশী ভালো বোঝে ?আজকে যারা আন্দোলনের নামে রাস্তায় নেমেছেন বা নামার চেষ্টা করছেন তাদের ইতিহাস সকলেই জানে বা জানা আছে।
এটা ঠিক তেলের দাম বড়ানোর কারণে লাভবান হচ্ছে অন্য সকলে, কিন্তু ভোগান্তি সাধারণদের।কেননা ডিজেল তেল এ ট্রাক বাস চলে। তাই মালিক বা বাস শ্রমিকগণ লোকসান দেবেন না। লোকসান দিবে যাত্রীগণ।
এ দিকটায় যদি সরকারের কর্তৃপক্ষ শক্ত অবস্থানে না নামেন তাহলে ভোগান্তি যাত্রী বা মালামাল পরিবহনে একপ্রকার নৈরাজ্য চালাবে। সুযোগ সন্ধানীরা। সরকারের কর্তৃপক্ষ আর যাই হোক কোন ভাবেই জনগণের কষ্ট উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।এ ছাড়া বর্তমান বাংলাদেশ ব্যাংক এর রিজার্ভ নির্ভর করে রপ্তানী আয় এবং রেমিটেন্স এর উপর। রপ্তানীতে যদিও শিল্প কারখানার ভূমিকা মূল , কিন্তু তেল এর কারণে একটা প্রভাব রয়েছে উৎপাদন খাতে। সেখানে উৎপাদন যাতে ব্যাহত না হয় তা যত দ্রুত সমাধান দেয়া যায় ততই মঙ্গল।
আর রেমিটেন্স প্রবাহ ডলার এর কারণে অস্থির এবং হুন্ডি ব্যবসায়ীরা দুবাই এবং চায়নাতে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে টাকা নিয়ে যাচ্ছে এবং রেমিটেন্স প্রবাহে প্রভাব ফেলেছে।
আরেকটি হচ্ছে বিদেশে কর্মী প্রেরণে সিন্ডিকেট এর হাতে আস্তে আস্তে জিম্মি হয়ে পড়ছে।যা আমাদের রেমিটেন্স প্রবাহের উপর প্রভাব বিস্তার করছে। গিলে ফেলছে পুরো দেশের সিংহভাগ রেমিটেন্স।
এই ব্যাপারে নানারূপ কথা বা সংবাদ উপস্থাপন হওয়া সত্ত্বেও কোন কার্যক্রম বা কার্যকরী পদক্ষেপ নেই বা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
সেই সিন্ডিকেট এর কবলে যা নিয়ে সরকারের সকল উন্নয়ন কে ম্লান করে দিচ্ছে। অনেকেই এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী’র হস্তক্ষেপ কামনা করা সত্ত্বেও হতাশ হচ্ছেন।
এ ক্ষেত্রে নানারূপ কথা বাজারে ঘুরপাক খাচ্ছে। এমতাবস্থায় আমাদের এই গতি পথে সুযোগ
দেশবিরোধীদের কোনভাবেই দেয়া যাবে না।তেমনি জনজীবন আর রেমিটেন্স নিয়ে কোন প্রকার আপোষ করার সুযোগ নেই তাই জনগণ আর বর্তমান সরকার একে অপরের জন্য সম্পূরক।