স্বাস্থ্য ডেস্ক –
চোখে আঘাত লাগতে পারে বিভিন্ন কারণে।কেমিক্যাল চোখে লাগলেই দেখা দিতে পারে সমস্যা। বিশ্বব্যাপী চোখের আঘাতের প্রায় ১০ শতাংশ কারণ কেমিক্যালজনিত। এ ধরনের আঘাত সাধারণত কর্মক্ষেত্রে বেশি হয়। শিল্প-কলকারখানাগুলোতে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহৃত হয়। বাসা-বাড়িতেও বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। এখান থেকেও ঘটতে পারে দূর্ঘটনা।
চোখের ক্ষতি কারক এমন কেমিক্যালগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়- অ্যালকালি বা ক্ষার,এসিড বা অম্ল ও ইরিটেন্ট বা অস্বস্তি সৃষ্টিকারী।
অ্যালকালির দ্বারা চোখের আঘাত খুবই মারাত্মক। এটি কেবল চোখের দৃশ্যমান অংশ যেমন– কর্নিয়া, কনজাংটিভা, স্কেলার ক্ষতিই করে না বরং ভেতরের অংশেও মারাত্মক ক্ষতি করে।
এ ধরনের কেমিক্যালে অন্ধত্ব বেশি হতে পারে। বিভিন্ন ক্ষারীয় তরল, কীটনাশক, ড্রেন ক্লিনার, কৃষিকাজে ব্যবহৃত সার, হাঁড়ি-পাতিল ক্লিনার, সিমেন্ট ইত্যাদি চোখে পড়লে অ্যালকালি বার্ন হতে পারে।
এসিড দ্বারা চোখের আঘাত অ্যালকালির চেয়ে তুলনামূলক কম ক্ষতিকর। কারণ এটি চোখের ভেতরের অঙ্গকে ক্ষতি করে না। এসিডের তালিকায় আছে– ভিনেগার, নেইল পলিশ রিমুভার, ব্যাটারির পানি, বিভিন্ন ধরনের এসিড।
ডিটারজেন্ট, পিপার স্প্রে ইত্যাদি চোখের তেমন ক্ষতি না করলেও চোখে জ্বালাপোড়া করে, এদের বলে ইরিটেন্ট। চোখে কেমিক্যাল পড়লে চোখ লাল হতে পারে, ব্যথা করে, জ্বালাপোড়া করে, পানি ঝরতে থাকে, চোখে খচখচ করে, চোখের পাতা ফুলে যেতে পারে ও দৃষ্টি আবছা হতে পারে।
চোখ ডলাডলি করা যাবে না। এতে চোখের আরও ক্ষতি হয়। চোখে অনেকেই কাপড় গরম করে ছ্যাঁকা দেন, এটিও ঠিক নয়।
কেমিক্যাল পড়ার সঙ্গে সঙ্গে আগে ১০-১৫ মিনিট পানি ঢালুন। চোখের পাতা খুলতে কষ্ট হলেও পানি ঢালতে হবে। এটিই প্রধান চিকিৎসা। কারণ কেমিক্যাল চোখে যতক্ষণ থাকবে তত ক্ষতি করতে থাকবে। পানি ঢেলে কেমিক্যাল চোখ থেকে বের করে দিতে হবে। এরপর আক্রান্তকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কারণ এটা অল্প সমস্যা মনে হলেও, পরীক্ষা করে মারাত্মক কিছু ধরা পড়তে পারে।
কোনো কেমিক্যাল নিয়ে কাজ করার সময় চোখে গগলস বা চশমা ব্যবহার করুন। যে কোনো কেমিক্যাল শিশুর নাগালের বাইরে রাখুন।
চোখে কেমিক্যালজনিত আঘাত খুব সহজেই প্রতিরোধ করা যায়। ৯০ শতাংশই প্রতিরোধযোগ্য। এ জন্য প্রয়োজন সচেতনতা।