তুহিন চৌধুরী
রাজনৈতিক -সামাজিক- ক্রীড়া সংগঠক।
বাঙালি জাতির প্রধান খাদ্য ভাত – কথায় বলে মাছে ভাতে বাঙালি।আমাদের দেশে কোন এক সময় একটা ফসল হতো , কালের বিবর্তনে এখন কোন কোন অঞ্চলে চলে ৩/৪ টি ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষক লড়াই করে।
মাননীয় কৃষি মন্ত্রি মহোদয় বলেছেন, এক সভায় ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত ১২ বছরে কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনে যে সাফল্য এসেছে তা ধরে রাখতে হবে ও তা আরো বেগবান করতে হবে। দেশে জনসংখ্যা বাড়ানোর সঙ্গে খাদ্যের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। এ অবস্থায় ভবিষ্যতের চাহিদা মেটাতে আরো নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে।তিনি যথার্থই বলেছেন। কিন্তু বর্তমান করোনা কালীন সময়ে ও আল্লাহর রহমতে আমাদের ফসল ভালো হয়েছে।কিন্তু ভরা মৌসুমে যেভাবে চালের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে ভোক্তা পর্যায়ে উদ্বিগ্নতা বাড়ছে।আর কেন বাড়ছে তা নিয়ে ক্ষতিয়ে দেখছে সংশ্লিষ্ট মহল।সরকার কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য ৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে। কিন্তু বর্তমানে কৃষক তার উৎপাদিত ধানের ৭০ ভাগ বিক্রয় করে দেয় কেননা তার পরবর্তী ফসল ফলানোর প্রস্তুতি নেয়ার জন্য। একসময় আমাদের দেশে প্রায় ২০ হাজার হাস্কি চালকল ও চাতাল ছিল। প্রতিদিন উৎপাদন এবং প্রতিদিন বিপণনের ভিত্তিতে ব্যবসা করতেন। আবার পুঁজির অভাবে মজুদ করা সম্ভব হতো না কিংবা ব্যাংকগুলি তাদের অর্থায়নে ঝুঁকি নিতো না ।
কিন্তু বর্তমানে চিত্র ভিন্ন । অটো চাল কল ও হাস্কি চাল কলের জায়গা নিয়েছে এবং উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেশী। ধান প্রচুর মজুদ এবং চাল তার গোডাউন এবং সাইলোতে মজুদ থাকে । ব্যাংক এর প্রচুর অর্থায়ন এর কারণে তার কোন অসুবিধা নেই। যার ফলে তার চালের নাম মনোপলি – ব্যাবসাটাও মনোপলি।চালের নাম-মিনিকেট-রসগোল্লা-জামাই খাওয়া-ঝরনা-জিরা সাইল ইত্যাদি ।আসলে এটা একধরনের ধোঁকাবাজি এবং প্রকারভেদ এ চালের দাম ৪০ টাকা হতে ৮০ টাকা পর্যন্ত । চিকন মাঝারি ৫৫/৬৫ টাকা ।এখানে ধানের থেকে চাল উৎপাদন করতে গিয়ে অটো চালকল তুষ-ব্যার্যান্ড-মরাদানা-লালদানা সহ সব বিক্রয় করার সুযোগ আছে। নানা প্রক্রিয়া করে নানা রূপ আয়ের সুযোগ রয়েছে।
কিন্তু চাল বিক্রিতে তারা ভোক্তাকে যেভাবে দিচ্ছে ধোকা তা অচিরেই জিম্মি করার পূর্বাভাস । তার যে সকল নামে চালের দাম হাঁকাতে বা অভ্যস্ত অচিরেই প্রায় ১৫০০ অটো চালকল দেশের মানুষকে জিম্মি করে ফেলবে। কৃষকের জন্য সরকার যে সুবিধা দিচ্ছে তা একপ্রকার কাজে আসছে না । এখানে ধানের উৎপাদন খরচ
কমানোর জন্য সরকার কৃষিপণ্যের উপর সরাসরি সুযোগ দিতে পারে। অটো চাল কলের চাল বাজার জাত বা সরবরাহ তদারকিতে থাকতে হবে ।বাজারে পাইকারি সেলারদের উপর চাপ দিয়ে লাভ হবে না কেননা অটো মালিকগণ দাম বেঁধে দেয়। ছোট ছোট অটো চাল কল তৈরীতে সুযোগ দেয়া যেতে পারে । যে জাতের নেই কোন ধানকিন্তু চালের দিয়েছে তারা হরেক নাম।
মৌসুমের মাঝামাঝি সময় যখন কৃষকের ঘরে ধান থাকে না ঘাটতি মেটাতে মুক্তভাবে চাল আমদানি করতে হবে । কেননা করোনার কারণে আগামীতে খাদ্য ঘাটতির কথা বলছেন বিশেষজ্ঞগণ। তাই চালের বাজারে চালাকি চলছে তেলেসমাতি। আর আমরা তাই এখন পাইজাম চাল বা ২৮ নং অথবা বি আর ১৪ চাল চিনি না বরং চালের নাম জানি মিনিকেট। অর্থাৎ চাল পলিশ করে মিনি করে মিনি কাট করে তার নাম মিনিকেট