মো:সাকিব চৌধুরী,স্টাফ রিপোর্টার-
লালমনিরহাটে অটোরিক্সা চালককে গলাকেটে হত্যা করে অটোরিক্সা ছিনতাইয়ের ক্লুলেস মামলার রহস্যা উন্মোচন এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত প্রধান আসামী ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৩।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রংপুর মহানগরীর পার্কের মোড় থেকে মামলার প্রধান আসামী মোঃ সুজন চৌধুরীকে (৪০) এবং তার সহযোগী লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ থানার কাকিনা এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে মোঃ মমিনুর ইসলামকে (২৯) নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। সুজন রংপুর মহানগরীর তাজহাট থানার আশরতপুর ঈদগাহ পাড়া এলাকার বাবলু চৌধুরীর ছেলে।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) র্যাব-১৩ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আসামীদের দেওয়া তথ্য মতে, হত্যার স্বীকার সুলতান মিয়ার অটোরিক্সাটি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানার মহিষামুড়ি এলাকার সাদেকুল ইসলামের (৩০) বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। আসামীরা সাদেকুল ইসলামের কাছে অটোরিক্সাটি ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিল। পরবর্তীতে আসামীদের দেখানো মতে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি ঘটনাস্থলের পাশের ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- র্যাব-১৩ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল ওই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। এরপর ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
আসামীদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়- গত ০৫ সেপ্টেম্বর বিকাল সাড়ে ৫ টায় হত্যাকাণ্ডের শিকার সুলতান মিয়াকে (৩৪) যতক্ষণ অটোতে চার্জ থাকবে ততক্ষণ ঘুরবে বলে ভাড়া ঠিক করে তারা। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তাকে খাবার খাইয়ে পার্কের মোড় থেকে মহীপুর ব্রিজের ওপারে নিয়ে যায়। সেখানে চা, সিগারেট খাওয়ার বাহানা করে কালক্ষেপণ করে এবং তাকে খাবারের সাথে ঘুমের ঔষধ জাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে তা খাইয়ে অজ্ঞান করে ফেলে। এরপর তারা ভিকটিমকে ঘটনাস্থল লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ ধানাধীন পশ্চিম ইশোরকোল তিস্তা নদীগামী ক্যানেলের পাড়ে নিয়ে গিয়ে রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টায় ছুরি দিয়ে গলা কেটে মৃতদেহ ক্যানেলে ফেলে দেয়।
এদিকে, গ্রেফতারকৃত আসামীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, সংযুক্ত সীম, ছিনতাইকৃত অটোরিক্সা এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিসহ লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ০৫ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ ধানাধীন পশ্চিম ইশোরকোল হাইস্কুল সংলগ্ন রুদ্রেশ্বর কাকিনা হতে তিস্তা নদীগামী ক্যানেলের পাড়ে অটো চালক সুলতান মিয়ার (৩৪) মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। সুলতান মিয়ার ভাই মৃত দেহ দেখে লাশ শনাক্ত করে। এরপর সুলতানের বাবা মোঃ আব্দুল গফুর (৭০) বাদী হয়ে ০৬ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন।