আখ বাংলাদেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল।বাংলাদেশের কিছু জেলাতে আখের চাষ হয়।
দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো আখ চাষের উপযোগী। আখ রসের পুষ্টিগুণ ও নানা উপকারিতা আছে। আখ ঘাস জাতীয় দন্ডাকৃতি ডালপালাহীন একবর্ষ বা বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ। আখের প্রথম উৎপাদন হয় গায়নাতে, এরপর সারা বিশ্বে আখ চাষ শুরু হয়। দক্ষিণএশিয়ার বাংলাদেশ, ভারত এবং ব্রাজিল, ল্যাট্রিন আমেরিকা প্রভৃতি দেশে প্রচুর আখ চাষ হয়। দেশের প্রায় সবখানেই আখ জন্মে ও বিভিন্ন প্রজাতির আখ রয়েছে। বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট আখ নিয়ে গবেষণা করে এ পর্যন্ত ৩০টির অধিক প্রজাতির আখের নতুন জাত বের করেছে। গ্রাম বাংলার সবখানে ছোট,বড় সবাই আখ চিবিয়ে রস খাওয়া পছন্দ করে। আখের রস যে উপকারী সবাই বিশ্বাস করলেও এর পুষ্টি গুণ কতখানি তা অনেকেরই জানা না থাকতে পারে। তাই আখ রসের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা তুলে ধরা হলো –
আখের রস পানিশূন্যতা,কিডনির সমস্যা, দাঁত ও মাড়ির সমস্যা দূর করে। হাড় ও দাঁত মজবুত করে,
ত্বক ভালো রাখে,হৃদরোগ কমায়, হজম শক্তি বাড়ায়,ওজন কমায়,ক্যানসার প্রতিরোধ করে
নখ ভাল রাখে,পুষ্টির অভাব,ব্রণ ও লিভারের সমস্যা দূর করে,গর্ভবতী নারীদের জন্য ভালো,শরীরে দ্রুত শক্তি যোগায়,নিশ্বাসের দূর্গন্ধ ও দাঁতের ক্ষত রোধ করে। পরিশ্রমের পর শরীর ঘেমে ঠান্ডালাগা রোধ করে।পেটের গোলযোগ,কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করে,
শরীরের ক্ষত সারিয়ে তোলে,খারাপ মাত্রার কোলেস্টেল কমায়, জন্ডিস রোগে উপকারী,অন্ত্রের সমস্যা,রক্তস্বল্পতা ও আমাশয় দূর করে। চোখ- মন সতেজ ও প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। আখের রস মেটাবলিজম এবং জীবাণু মুক্ত করে।
আখের রসে ফ্লেভিনয়েডস্ এবং ফেনোলিক যৌগ, আয়রন এবং ফলিয়েট, ফ্লেভিনয়েড এন্টিটিউমার, এন্টিঅক্সিডেন্ট, এন্টি ভাইরাস এবং এন্টি এলার্জিক গুনাগুণ রয়েছে। পলিফেনলস এটি শক্তিশালী পলি নিউট্রিয়েন্টস যাতে এন্টি
অক্সিডেন্টের গুনাবলি রয়েছে। এতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন এবং মিনারেল যেমন পটাশিয়াম ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং লৌহসহ প্রয়োজনীয় এমাইনো এসিড, পিপে কোলিক (Pipecolic)এসিড, মেথিওনিন, ট্রিপটোফ্যান, বি-অ্যালনিন এবং আরজিনিন রয়েছে। বেসিক এমাইনো এসিড যেমন-হিস্টিডিন, লাইসিন, আরজিনিন। এতে খুব কম কোলস্টেরল রয়েছে। আছে এলডিএল, ট্র্রাইগ্লিসারাইড।
আখ দাঁত দিয়ে ছিলে চুষে বা রস বের করে খেলে উপকার বেশি।সবচেয়ে ভালো দাঁতের সাহায্যে কামড়িয়ে খাওয়া;এতে কোন রকম ময়লা জীবাণু মিশতে পারে না এবং বাসী,মাছি বসা অস্বাস্থ্যকর রসের রোগজীবাণু পেটে প্রবেশ করার ভয় নেই।আখের রস দাঁতের সাহায্যে চুষে খেলে রক্তবিকার,রক্তের দোষ ও রক্তপিত্ত ধ্বংস করে। শর্করার মতো শক্তি জোগায়,জ্বালা পোড়ায় আরাম দায়ক। আখের রস দোষের মধ্যে একটি কফকারক। মেশিনে পেষা আখ রসে ময়লা ও জীবাণু মিশে থাকে বলে ক্ষতিকর; তাই মেশিনে পেষা রস না খাওয়াই উত্তম।
আখ রসে পাওয়া যায় প্রাকৃতিক চিনি যা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বৃদ্ধি রোধ করে। যারা ডায়াবেটিস রোগী, তারা ডাক্তারের পরামর্শে রস পান করবেন।