মোঃ সাকিব চৌধুরী:
রংপুরের হারাগাছ পৌর এলাকায় রাতের অন্ধকারে পুত্রবধূর ঘরে প্রবেশের সন্দেহে শ্বশুরের গলায় জুতা পরানো হয়। গত ২২ জুলাই রাতে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার ৮ দিন পর শুক্রবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর ছেলে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের হারাগাছ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ভুক্তভোগীর পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, হারাগাছের ধুমগাড়া গ্রামে শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে পুত্রবধূর ঘরে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রবেশ করার অভিযোগ তুলে ভুক্তভোগী শ্বশুরের বিচারের দাবিতে লিফলেটও বিতরণ করে একটি পক্ষ। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে তোলপাড় শুরু হলে শুক্রবার বিকেলে ধুমগাড়া জামে মসজিদের সামনে সালিশ বসে। থানায় দেয়া অভিযোগে আরও বলা হয়, সালিশে টাংরির বাজার এলাকার আব্দুর রউফ নামের এক ব্যক্তি সন্দেহবশত ওই শ্বশুরকে জুতার মালা পরিয়ে ঘোরানোর সিদ্ধান্ত দিলে সালিশে উপস্থিত মনির হোসেন, রাসেলসহ কয়েকজন মিলে ভুক্তভোগীর গলায় জুতার মালা পরিয়ে বাজারে ঘোরাতে থাকে। ওসি জানান, এ ঘটনায় সালিশি বৈঠকে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। সংঘাতের আশঙ্কার খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
ভুক্তভোগী শ্বশুরের পুত্রবধূ জানান, ওইদিন রাত আড়াইটা থেকে তিনটা হবে। এ সময় আমার স্বামী ঘরে ছিলেন না। এর মধ্যে কেউ একজন আমার ঘরে ঢুকেছিল। টের পেয়ে আমি চিৎকার দিলে ওই লোক পালিয়ে যায়। ঘর অন্ধকার থাকায় আমি তাকে চিনতে পারিনি। কিন্তু স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি আমার শ্বশুরকে অপমান করার জন্য সালিশ করে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। ভুক্তভোগীর পুত্র জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে মনির হোসেন ও আব্দুর রউফ পরিকল্পিতভাবে আমার পিতার ওপর মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তার বিরুদ্ধে সালিশ করে তাকে জুতার মালা পরিয়ে ঘুরিয়েছে। আমি এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়েছি। জড়িতদের গ্রেফতার এবং শাস্তি দেয়া না হলে এলাকায় বড় ধরনের সংঘাত হতে পারে।
সালিশের সিদ্ধান্ত দাতা আব্দুর রউফ জানান, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সালিশ হয়েছে। আমি তাকে জুতার মালা পরানোর সিদ্ধান্ত দেয়নি। সালিশে উপস্থিত বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে জুতার মালা পরিয়েছে। পরে আমরা তার মালা খুলে নিয়েছি।
জুতার মালা পরিয়ে বাজার ঘোরানোর নেতৃত্বদানকারী মনির হোসেন জানান, সালিশে প্রমাণিত হয়েছে শ্বশুর তার নিজের পুত্রের স্ত্রীর ঘরে রাতে ঢুকেছিল। এ সময় সেখানে উপস্থিত আব্দুর রউফের নির্দেশে উত্তেজিত জনতা ওই শ্বশুরের গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়। আমি তাকে
কৌশলে বাজারে নিয়ে গিয়ে তার গলা থেকে মালা সরিয়ে নিয়েছি।